মেহেরপুরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে অন্যের দোকানে ব্যবসা

 

মেহেরপুর অফিস: চুক্তিবিহীন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে ভাড়ায় নেয়া দোকানে ব্যবসা করে আসছিলেন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল সড়কের ওষুধব্যবসায়ী এমআর শামীম। দোকান ছেড়ে দিতে আদালতের নির্দেশনার পরও তিনি তান মানেননি। তবে গতকাল রোববার দোকানমালিক পক্ষের লোকজন দোকানটি দখলে নিয়েছেন। এতে ভাড়াটিয়া দোকান মালিকের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ তুলে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগীসূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সামনে আব্দুল কুদ্দসের বাসভবনের নিচতলায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে শামীম ফার্মেসি নামে ওষুধ ব্যবসা শুরু করেন এমআর শামীম। ১৯৯৬ সালের ৪ জানুয়ারি পাঁচশ টাকা ভাড়া নির্ধারণ পূর্বক পাঁচ বছরের জন্য ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে দোকান মালিকের সাথে তার চুক্তি সম্পাদন হয়। মেয়াদ শেষে ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আবারও পাঁচ বছরের জন্য নতুন চুক্তি হয়। এর মেয়াদ শেষে দোকান মালিকের প্রয়োজনে দোকান ফেরত চাইলে এমআর শামীম পৌর চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর দাবি করেন। সে মতে আবারও চুক্তি হয়। এরপর তিনি দোকান না ছেড়ে তালবাহনা করতে থাকেন। দোকান না ছাড়তে এমআর শামীম ২০০৭ সালের জুলাই মাসে মেহেরপুর সহকারী সিনিয়র জজ আদালতে একটি মিস মামলা দায়ের করেন। দোকানমালিক আব্দুল কুদ্দুসও দোকান ফিরে পেতে একই আদালতে পরের বছর একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক চলতি বছরের ২৩ জুলাই রায় প্রদান করেন। দুটি মামলাতেই নিজের পক্ষে রায় পান আব্দুল কুদ্দুস। রায় প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে দোকানটি ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও তা মানেননি এমআর শামীম। তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন মর্মে গত ২০ আগস্ট মেহেরপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে কাগজপত্র দাখিল করেন। বিজ্ঞ বিচারক তা আমলে নিয়ে চলতি মাসের ৫ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতের আদেশের কাগজপত্র দাখিলের জন্য শামীমকে নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্ধারিত দিনে উচ্চ আদালতের কোনো আদেশ জমা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। এমতাবস্থায় আব্দুল কুদ্দুসের পক্ষ থেকে গতকাল শামীমের দোকান থেকে মালামাল বের করে দিয়ে দোকানের দখল নেয়া হয়। পরে দোকান মালিকের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ তুলে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওষুধ ব্যবসায়ী এমআর শামীম।

এ ব্যাপারে এমআর শামীম জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতের অ্যাডভোকেট স্বাক্ষরিত কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তিনি চেষ্টা করে আদেশের কাগজপত্র তুলতে পারেননি। উচ্চ আদালতের আদেশ আনতে সময় লাগবে।

তবে দোকানমালিক আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, আদালতের রায় অনুযায়ী নিজ উদ্যোগে দোকান খালি করার কথা থাকলেও তা অমান্য করেছেন ভাড়াটিয়া শামীম। বারবার তাকে বলা হলেও তিনি শোনেননি। উল্টো তিনি আবারও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।