মেহেরপুরের সোনাপুরে দু পক্ষের সংঘর্ষে বাড়ি ভাঙচুর : বোমার বিস্ফোরণ : মেম্বারসহ দুজন গ্রেফতার

মেহেরপুর অফিস: ছাগল চুরির ঘটনা কেন্দ্র করে মেহেরপুর সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের বিবাদমান দু পক্ষের মধ্যে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে একটি বোমার বিস্ফোরণ ও ইউপি সদস্য মামলত হোসেনের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। বোমা নিক্ষেপের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন মামলত মেম্বার ও তার ভাই আতাহার আলী। পরিস্থিতি শান্ত হলেও দু পক্ষের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতরা হচ্ছেন- কফিল উদ্দীন মাস্টার (৫০), তার পক্ষের ফিরতাজ মণ্ডল (৩৮) ও তার ছেলে লিজন হোসেন (২২), কফিল উদ্দীন (৪৫) ও তার ভাই আতাহার আলী।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার সোনাপুর গ্রামের একটি ব্যক্তি একটি ছাগল চুরি করে। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন পিরোজপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা মামলত হোসেন। ছাগল চোরের বিচার নিয়ে মামলত মেম্বার ও গ্রামের কফিল উদ্দীন মাস্টার পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। বিষয়টি রোববার মিটে গেলেও এর জেরে দু পক্ষ অনেকটাই মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে। গতকাল সন্ধ্যায় মেম্বারের বাড়ির পাশে দুপক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও তর্কযুদ্ধ শুরু হয়। তর্কবিতর্ক এক পর্যায়ে সংঘর্ষের রূপ নেয়। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয়পক্ষের ৫ জন আহত হয়। সংঘর্ঘের সময় একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানান মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। সংঘর্ষে মামলত পক্ষের লোকজন পিছু হটলে তার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে কফিল উদ্দীন পক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আহত কফিল উদ্দীন মাস্টার, ফিরতাজ মণ্ডল ও তার ছেলে লিজনকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

গ্রেফতারের আগে মামলত মেম্বার সাংবাদিকদের জানান, ছাগল চুরির বিষয়টি তিনি সমাধান করে দিলেও কফিল পক্ষের লোকজন তা মানেননি। পূর্বের একটি গণ্ডগোলের প্রতিশোধ হিসেবে তার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। তার বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুটপাট করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌছালে উভয়পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালায় পুলিশ। তল্লাশির এক পর্যায়ে মামলত হোসেন মেম্বার ও তার ভাই আতাহার আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বোমা নিক্ষেপের দায়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসা দেয়া হবে।

মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গ্রেফতার দুজন ছাড়াও আহত আরো চারজনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত আহতরা হাসপাতালে পৌছায়নি বলে মেহেরপুর জেনারেল হাসপতাল সূত্রে জানা গেছে। গ্রেফতার এড়াতে তারা গোপনে কোনো হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।