মেহেরপুরের বারাদী বাজারে খ্যাপা কুকুরে কামড়ানো গরু-ছাগল জবাই করে গ্যাঁড়াকলে কসাই

মাজেদুল হক মানিক/আবু সুফিয়ান: মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদী বাজারে গতকাল শুক্রবার সকালে খ্যাপা কুকুরে কামড়ানো গরু ও ছাগল জবাই করে গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন কয়েকজন কসাই। বাজার কমিটি মাংস বিনষ্ট এবং অভিযুক্ত কসাইদের জরিমানা করেছে। জীবনে আর কখনো এমন কাজ করবে না বলে কসাইরা মুচলেকা দিলেও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এখন মানুষের মুখে মুখে।
স্থানীয় ও বাজার কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার সিংহাটি গ্রামের পশ্চিমপাড়ার আমিরুল ইসলামের একটি গরু ও একই পাড়ার মতিয়ার রহমানের একটি ছাগল কয়েক দিন আগে খ্যাপা কুকুরে কামড়ায়। গরু-ছাগল দুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা বিক্রির উদ্যোগ নেন। গরুটি নামমাত্র মূল্যে কেনেন বারাদী বাজারের ১১ সদস্যদের কসাই গং সামসুল-সাত্তার এবং ছাগল কেনেন রাজনগর গ্রামের কসাই ফরজ আলী। গতকাল শুক্রবার সকালে বারাদী বাজারের মাংস হাটে জবাই করে মাংস বিক্রি শুরু করেন তারা। বিষয়টি জানতে পেয়ে বারাদী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান কসাইদের প্রতিরোধ করেন। বাজার কমিটির চাপে পড়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অভিযুক্ত কসাইরা। এ সময় জবাইকৃত গরু-ছাগলের মাংস বাজারের পার্শ্ববর্তী স্থানে মাটির নিচে পুঁতে দেয়া হয়। এ নিয়ে বাজারে তাৎক্ষণিক সালিস বসানো হয়। সালিসে অভিযুক্ত কসাই সামসুল-সাত্তার গ্রুপের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ও ফরজ আলীর কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। জেনেশুনে এমন পশু জবাই করার অপরাধে পশুজবাইকারী রাজনগর গ্রামের আব্দুল লতিফের কাছ থেকে আদায় করা হয় আরো তিন হাজার টাকা। জীবনে আর কখনো রোগাক্রান্ত কিংবা খ্যাপা কুকুরে কামড়ানো গরু-ছাগল জবাই করবে না বলে লিখিত মুচলেকা দেয় অভিযুক্ত কসাই ও আব্দুল লতিফ। সালিসে আরো উপস্থিত ছিলেন বারাদী বাজার কমিটির সভাপতি লিয়াকত সর্দ্দার, সাংবাদিক রফিকুল আলম, আবু সুফিয়ানসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। জরিমানার টাকা বাজার কমিটির উন্নয়নে ব্যয় করা হবে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক। তবে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটলে জড়িত কসাইদের বারাদী বাজার থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি করেন তিনি।
এদিকে খ্যাপা কুকুরে কামড়ানো গরু-ছাগল জবাইয়ের খবর শুনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বাজারে ভিড় করে কসাইদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উত্থাপন করেন। ক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক সময় রোগাক্রান্ত গরু-ছাগল জবাই করে দেদারসে বিক্রি করেন কয়েকজন কসাই। ক্রেতারা বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিবাদ করলে কসাইরা তাদের সাথে অসদাচরণ করেন। হুমকি-ধামকিসহ মাংস কাটার অস্ত্র দিয়ে ক্রেতাদের কোপাতে উদ্যত হয় কসাইরা। তাছাড়া অর্ধমৃত পশু জবাইয়ের ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে ক্রেতাদের মনের মাঝে ক্ষোভের ঝড় তুললেও তারা প্রতিবাদ করতে পারছিলেন না। তাই গতকালের ঘটনায় বাজার কমিটির ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।