মেহেরপুরের টেংরামারী মাঠে অজ্ঞাত দুবৃর্ত্তদের নৃংসশতা: অটোচালককে খোকন খাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

 

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকার অটোচালক এনায়েত হোসেন ওরফে খোকন খাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার টেংরামারী মাঠের রাস্তার ধার থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে অটো ছিনতাইরের জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিহত খোকন খাঁ (৪৮) মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকার মৃত আব্দুল জলিল খাঁর ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করে।meherpur-murder-pic-1

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, মৃতদেহ উদ্ধারের আগ মুহূর্তে নিহতের ছোট ভাই মিন্টু খাঁ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিচয় শনাক্ত করেন। তিনি জানান- প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইকারীরা তাকে হত্যা শেষে ইজিবাইকটি নিয়ে গেছে। ছিনতাই না অন্য কোনো কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন- মৃতদেহ উদ্ধারের সময় তার দু হাত পেছন মোড়া দিয়ে রশিতে বাঁধা ছিলো। শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর গলায় সে রশিও বাঁধা রয়েছে। সেখানে তার অটো পাওয়া যায়নি। হত্যাকারীদের আটকসহ ইজিবাইক উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

নিহত এনায়েত খানের মা নুরজাহান খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে সে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। রাতে অনেক খোঁজা-খুজি করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলফোনও বন্ধ ছিলো। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড তা ধারণা করতে পারছেন না পরিবার।

এদিকে ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে লাশ স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এনায়েত হোসেন ওরফে খোকন খাঁর লাশ হোটেল বাজারস্থ বাড়িতে নেয়া হলে সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠে। এদিন বাদ আসর মেহেরপুর হোটেল বাজার জামে মসজিদের সামনে নামাজে জানাজা শেষে লাশ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার দাফন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। নিহত এনায়েত হোসেন ওরফে খোকন খাঁ ছিলেন মেহেরপুর জেলা শহরের হোটেলবাজারের মরহুম আব্দুল জলিল খানের ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে ৩য়। প্রায় ২ যুগ আগে তিনি নিজ শহরের ফুলবাগানপাড়ায় বিয়ে করেন। সংসার জীবনের তাদের কোল জুড়ে আসে এক মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়ে শিখা বিবাহিতা। এরপরও তিনি এবছর মেহেরপুর সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্রী। ছেলে শিপন এ বছর মেহেরপুর সরকারি ঊচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষার্থী।

মেহেরপুর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, গতরাতে নিহতের স্ত্রী জুঁই অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আরও জানান- রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অটো রিকশাটি উদ্ধার কিংবা ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।