মেরিনা অপমৃত্যু মামলাটি হত্যামামলায় রূপান্তর : স্বামীসহ ৪ জন আসামি

দামুড়হুদার রামনগরে ৯ মাসের অন্তস্বত্তা গৃহবধ মেরিনা হত্যার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ


দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার রামনগরে ৯ মাসের অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূ মেরিনা আত্মহত্যা করেনি। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য মেলায় থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলাটি হত্যামামলায় রূপান্তর করেছে।

মামলার আসামির তালিকায় উঠে এসেছে নিহত গৃহবধূর স্বামী রনি, শ্বশুর শহর আলী, শাশুড়ি রেনু খাতুন ও দেবর জনি। এদেরকে আসামি করে মেরিনার পিতা হত্যামামলা করেছেন। সূত্র বলেছে, গত রোববার ওই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দামুড়হুদা থানায় পৌঁছুলে থানা পুলিশ বিষয়টি নিহত মেরিনার পিতা আয়ুব আলীকে জানায় এবং তিনি গতকাল সোমবার বাদী হয়ে ওই ৪ জনের নামে দামুড়হুদা থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর হঠাতপাড়ার শহর আলীর ছেলে রনির সাথে আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের আয়ুব আলীর মেয়ে মেরিনার প্রায় ৬ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ মেরিনাকে পাষণ্ড স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে শারীরিক ও মানুষিকভাবে  নির্যাতন করে আসছিলো। পিতা আয়ুব আলী মেয়ের সুখের কথা ভেবে কয়েক দফায় মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দেন জামাই রনির হাতে। তাতেও নির্যাতন থেমে থাকেনি গৃহবধূ মেরিনার ওপর। বরং দিনের পর দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছিলো এক সন্তানের জননী ৯ মাসের অন্তঃস্বত্তা ওই গৃহবধূর ওপর। এরই এক পর্যায়ে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং ভোরে স্বামী-শাশুড়িসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। পাষণ্ড স্বামী রনি আত্মগোপনে থেকে ওই দিন সকাল ৭টার দিকে তার শ্বশুরের নিকট মোবাইলফোনে মেরিনার মৃত্যুর খবর জানায়। কীভাবে মারা গেলো জানতে চাইলে রনি মোবাইলফোন বন্ধ করে দেয়। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে পিতা আয়ুব আলী ছুটে আসেন মেয়ের শ্বশুর বাড়ি রামনগর গ্রামে। মেয়ের মৃতদেহ দেখে সন্দেহ হলে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান এবং এ সংক্রান্তে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ গৃহবধূ মেরিনার মৃতদেহ ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালমর্গে নেয় ময়নাতদন্তের জন্য। গত রোববার ওই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দামুড়হুদা থানায় এসে পৌঁছুলে নিহত গৃহবধূ মেরিনার পিতা বাদী হয়ে গতকাল সোমবার ওই হত্যামামলা দায়ের করেন।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, গত রোববার ওই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থানায় পৌঁছায়। তাতে বলা হয়েছে গৃহবধূ মেরিনাকে রাত আনুমানিক ২টার দিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর গতকাল সোমবার নিহতের পিতাকে খবর দেয়া হয়।  নিহতের পিতা দুপুরে থানায় এসে এ হত্যামামলা দায়ের করেন। তবে এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।