মুজিবনগর সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিজিবির তীব্র প্রতিবাদ :বিএসএফ’র দুঃখ প্রকাশ

 

মুজিবনগর প্রতিনিধি: মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আব্দুল খালেক নিহতের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। গতকাল শনিবার ওই সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে দুদফা পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের নামে মুজিবনগর থানায় হত্যামামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনার পর থেকেই মুজিবনগর সীমান্তে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয় বিজিবি’র। গুলির প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে পত্র দিয়ে পকাতা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। বেলা ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক সীমান পিলার ১০৫ কার কাছাকাছি মুজিবনগর-হৃদয়পুর সীমান্তে পকাতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতেই সীমান্তে মারণঘাতি গুলির ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই বর্বরতার কৈফিয়ত তলব করা হয়। বিএসফ প্রতিনিধি দুঃখ প্রকাশ করে জানায় ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না। বাংলাদেশি নাগরিকরা যাতে আইন মান্য করে সীমান্তে চলাচল করে তার অনুরোধ করেন বিএসএফ প্রতনিধি। বৈঠকে বিজিবি’র নেতৃত্ব দেন বিজিবি মুজিবনগর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শফিকুল আলম। অপরদিকে বিএসএফ’র নেতৃত্বে ছিলেন বিএসএফ ১১৯ ব্যাটালিয়নের হৃদয়পুর কোম্পানি কমান্ডার রাম আবতার।

এদিকে একই স্থানে বিকেলে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিজিবি’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত ব্যাটালিয়ন কমান্ডার অতিরিক্ত পরিচালক আনোয়ার জাহিদ এবং প্রতিপক্ষ বিএসএফ এর পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১১৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী মালাকিয়াত সিং। হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের দাবি করা বিজিবি’র পক্ষ থেকে। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ১১৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী মালাকিয়াত সিং পতাকা বৈঠকে সকলকে আশ্বস্থ করেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বিএসএফ সদস্যদের আরও প্রেষণা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান। উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকা, ভারত থেকে কোনো মাদকদ্রব্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে না আসা এবং অবৈধভাবে কোনো বাংলাদেশি/ভারতীয় নাগরিক সীমান্ত পারাপার না হয় সে ব্যাপারেও বর্ণিত বৈঠকে আলোচনা হয়।

এদিকে গতকাল আব্দুল খালেকের মরদেহ ময়নাতদন্তশেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বিকেলে নিহতের ভাই ফরিদ হোসেন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। সীমান্তের অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের আসামি করা হয়। মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, মামলাটি তদন্তপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সোনাপুর গ্রামের দুলু শেখের ছেলে আব্দুল খালেক (৩২) গ্রামের কয়েকজন চোরাচালানীর শ্রমিক হিসেবে সীমান্তে গরু কিনতে যান। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গরু কিনে নিয়ে ফিরে আসার সময় বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হন।