মুজিবনগরে গার্মেন্টসকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার : নেপথ্য রহস্যাবৃত

মায়ের অভিযোগ সুরেখাকে তার দ্বিতীয় স্বামী মেরে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে
মুজিবনগর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজার সংলগ্ন আমবাগানের একটি গাছ থেকে গার্মেন্টসকর্মী সুরেখা খাতুনের (৩৬) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে একটি আমগাছ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। গাছের ডালে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকলেও পায়ের কিছু অংশ মাটিতে ছুঁয়ে থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে রহস্য দানা বাঁধে। পুলিশ অবশ্য ঘটনাটিকে প্রাথমিক পর্যায়ে আত্মহত্যা বলে দাবি করতে থাকে। অপরদিকে নিহতের মায়ের দাবি সুরেখাকে তার দ্বিতীয় স্বামী হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে।
নিহত সুরেখা খাতুন মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামের মৃত আসান আলীর মেয়ে। সে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কর্মরত ছিলো। তার রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রথমেই ঘটনাকে আত্মহত্যা ধরে না নিয়ে পুলিশের সুষ্ঠু তদন্ত করা দরকার বলে স্থানীয়দের অধিকাংশ দাবি তুলেছে। কারো কারো ধারণা, পেছন থেকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হতে পারে। গলায় ফাঁস দিলে যেমন জিহ্বা বের হয় তেমন বের হলেও ঝুলে থাকা মৃতদেহের পা কেন মাটিতে ওইভাবে ঠেকে? পুলিশ এ প্রশ্নের জবাব খুঁজলে রহস্যের জট খুলতে পারে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কেদারগঞ্জ বাজার সংলগ্ন আবুল হোসেনের আমবাগানের একটি গাছে গলায় ওড়না পেচানো এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ গাছ থেকে নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করে। অপরদিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছেই নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেন তার মা রাহেলা খাতুন। তিনি জানান, তিনদিন আগে সুরেখা ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার দ্বিতীয় স্বামী রামনগর গ্রামের হাবিল উদ্দীনের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে আজ ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিলো সুরেখার।
পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী হাবিল উদ্দীন তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করে সুরেখার মা বলেছেন, প্রথম স্বামী তাকে ডিভোর্স দিলে হাবিল উদ্দীনের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে করে। প্রথম পক্ষে তার দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। অপরদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান। তিনি জানান, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ঝুলন্ত মরদেহের বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য মরদেহ ময়নাতদন্ত করানো হচ্ছে।