মা নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা : অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও করা হয় জরিমানা

চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল এলাকার দুটি ক্লিনিক ও সেমাই তৈরির কারখানাসহ নীলমণিগঞ্জ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পৃথক অভিযান

 

Semai Karkhana

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজে উঠেছে ক্লিনিক, নার্সিং হোম। এসব ক্লিনিক নার্সিং হোমের অধিকাংশেই মানা হয় না স্বাস্থ্যবিধি। অসহায় গরিব-দুখি মানুষ সেবা নিতে এসে অনেকেরই প্রতারিত হয়ে ফিরতে হয় বাড়ি।

ক্লিনিক আছে কিন্তু ডাক্তার ও নার্স না থাকায় রোগীদের ভোগান্তির অন্ত থাকে না। এ কারণেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকাস্থ মা নাসিং হোমের অপারেশন থিয়েটার সিলগালাসহ ৫ হাজার ও দেশ ক্লিনিক মালিককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হাসান ও ফারজানা খানম পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত উপরোক্ত দণ্ডাদেশ দেন। সহযোগিতায় ছিলেন সিএস অফিসের এমওডিসি ডা. সাইদুর রহমান শামিম, বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান ও পুলিশ লাইনের একদল পুলিশ।

আদালতসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকার মা নার্সিং হোমে এমবিবিএস ডাক্তার দ্বারা অপারেশন করা হয় বলে লেখা থাকলেও ওই নার্সিং হোমে কোনো ডাক্তারকে দেখতে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া কোনো ডিপ্লোমাধারী নার্স তথা কোনো নার্সের হদিস পাওয়া যায়নি। তবে নার্সের চাকরি করতে ইচ্ছুক কিছু আবেদনকারীর আবেদন পাওয়া যায়। সদ্য অপারেশন করা একটি রোগীকে ডাক্তার বা নার্স আসে কি-না জিজ্ঞেস করা হলে ভুক্তভোগী রোগীটি বলেন, ৪ দিন আগে ডাক্তার এসেছিলো আর আসেনি। তাছাড়া অপারেশন থিয়েটার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় সেখানে ভালো মানের কোনো যন্ত্রপাতি নেই এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশও ভালো নয়। অপারেশন থিয়েটারে শুধু কিছু ফিজিশিয়ান ওষুধের নমুনা পাওয়া যায়। অপারেশন থিয়েটারের পরিবেশ এমন কেন? ডাক্তার বা নার্স কোথায়? প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না পারায় নার্সিং হোম মালিকদের মেডিকেল প্র্যাকটিস বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি আইন ১৯৮২’র ১৩(২) ধারায় অপারেশন থিয়েটার সিলগালাসহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে দেশ ক্লিনিকে অপারেশ মূল্য তালিকা ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ভালো না হওয়ায় ক্লিনিক মালিককে একই ধারায় ৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে বিকেল ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শেকড়াতলা মোড়ের সেমাই উৎপাদনের কারখানা এসটি প্রোডাক্টসসহ আলমডাঙ্গা উপজেলার নীলমণিগঞ্জ বাজারে জেলা মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রহিমের সহযোগিতায় পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসফিকুল আলম হালিম ও জেসমিন নাহার।

আদালতসূত্রে জানা গেছে, সেমাই উৎপাদনের কারখানা এসটি প্রোডাক্টস নিবন্ধন নবায়ন না করায় ১ হাজার, নীলমণিগঞ্জ বাজারের খাদ্য সামগ্রীতে বিধি মোতাবেক মেয়াদ, মূল্য, ওজন ও ব্যাচ নম্বর না থাকায় বৈদ্যনাথ ট্রেডার্সের মালিককে ২ হাজার, ষষ্ঠী কুমার ট্রেডার্সের মালিককে ১ হাজার ৫শ, মজিবার আলী মিষ্টি ভান্ডারে অপরিষ্কার পরিবেশসহ পঁচা দই রাখার দায়ে মালিককে ১ হাজার এবং বুশরা টেলিকম ও মোবাইল সার্ভিসিং মালিককে মেয়াদোত্তীর্ণ আইসক্রিম রাখার দায়ে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা আইন ২০০৯’র ৩৭, ৩৮ও ৫১ ধারা, অত্যাবশকীয় আইন ১২ ও কৃষিপণ্য বাজার নিয়ন্ত্রন আইন ১৭’র ৩ ধারায় ওই অর্থদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।