মারা গেলেন বিএনপি নেতা হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দু

ঢাকা থেকে মৃতদেহ নিয়ে জীবননগরের উদ্দেশে অ্যাম্বুলেন্স

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলা বিএনপি নেতা বিশিষ্ট পরিবহন ব্যবসায়ী উথলী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দু অবশেষে মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত ১১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহে….রাজেউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দু’কন্যা ও দু’ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। গত রাতেই সাইদুর রহমান ধুন্দুর মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার নিজ গ্রাম চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের উথলীর উদ্দেশে রওনা হন সাথে থাকা আত্মীয়স্বজন।
জীবননগর শহরের বাসিন্দা উথলী গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দু গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০টা ৪৪ মিনিটের দিকে গ্রামের বাড়ি উথলী হতে স্ত্রী পারভীন সুলতানা বন্যাকে নিয়ে নিজে পাজেরো জিপ চালিয়ে জীবননগরের শহরের বাসায় ফিরছিলেন। উথলী ফার্মপাড়ার অরক্ষিত রেলগেট পার হওয়ার সময় রেল লাইনের ওপর তার জিপের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় খুলনা থেকে সৈয়দপুরগামী ৭২৫ আপ রূপসা এক্সপ্রেস তাদের জিপটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ট্রেনের ধাক্কায় জিপটি দুমড়ে-মুচড়ে প্রায় ২শ গজ দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে।
খবর পেয়ে এলাকাবাসী অচেতন অবস্থায় তাদের দু’জনকে উদ্ধার করে রাতেই হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ও স্ত্রীকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। ধুন্দুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। স্বজনরা তাকে প্রথমে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। দফায়-দফায় চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। চিকিৎসকরা তার মস্তিষ্কের অসংখ্য স্থানে রক্তক্ষরণ হওয়ার আলামত দেখতে পান। এ কারণে তাকে আইসিইউতে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। জ্ঞান না ফিরলেও পরবর্তীতে তাকে বেডে দেয়া হয়। পরে তাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এখানেও তার শারীরিক অবস্থার অবণতি হলে সর্বশেষ তাকে তেজগাঁওয়ের বেসরকারি ইমতালস হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এখানে ক্ষণেক্ষণে তার অবস্থার অবণতি হতে থাকে।
সবর্শেষ গত শনিবার রাত হতে তার শারীরিক অবস্থার অবণতি হওয়া শুরু হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দুর মস্তিষ্কের নার্ভ ছিঁড়ে ড্যামেজ হয়ে গেছে। শরীরের ক্ষত হতে ইনফেকসন সৃষ্টি হয়ে রক্তে ছড়িয়ে পড়েছে এবং কিডনি ও হার্ট ঠিকমতো কাজ করছে না। এ অবস্থার মধ্যে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় এবং রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দুর জামাতা সাংবাদিক মামুন-উর-রহমান জানান, রাত ১টার দিকে ঢাকা থেকে ধুন্দুর মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে নেয়া হয়েছে।