মামা যখন বাবা : শৈলকুপায় পিতৃত্ব হরণের অভিযোগে আদালতে মামলা

 

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পিতার নাম গোপন করে জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী নামে (১৫) এক ছাত্রীকে স্কুলে ভর্তি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে শৈলকুপা উপজেলার যুগনী গ্রামে। পিতার নাম বাদ দিয়ে ওই ছাত্রীর মামাকে পিতা সাজিয়ে স্কুলে নিবন্ধন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পিতা জেএম মোস্তাক আহমেদ বাদী হয়ে ঝিনাইদহ দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালের ১৯ জানুয়ারি শৈলকুপার যুগনী গ্রামের মৃত নেকবার হোসেনের ছেলে জেএম মোস্তাক আহমেদের সাথে পার্শ্ববর্তী মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গোলাম রসুল মিয়ার কন্যা শাহনাজ পারভীনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছর ১৯৯৮ সালের ২২ অক্টোবর তাদের একটি কন্যা সন্তান হয়। তার নাম রাখা হয় জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। দীর্ঘদিন ঘর-সংসার করার পর মনমালিন্যের কারণে স্ত্রী শাহনাজ পারভীন ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর জেএম মোস্তাক আহমেদকে তালাক দেন। এরপর থেকে মা শাহনাজ ও মেয়ে শ্বশুরালয়ে থাকেন বলে জানান জেএম মোস্তাক আহমেদ। তিনি অভিযোগ করেন, ছোটবেলা থেকে তার মেয়ে নানাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছে। প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পিতার নাম হিসেবে মোস্তাক আহমেদের নাম ব্যবহার করা হলেও হঠাত করেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে তা পাল্টানো হয়। মধুপুর রাধাচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সময় মেয়ের নাম বদলে স্মিতা জান্নাত ও মামা রফিকুল ইসলামকে পিতা সাজিয়ে, মামি কানিজ শাকিলা শারমীনকে মাতা বানানো হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পশুপতি বিশ্বাস এ যোগসাজসের সাথে জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন। চলতি বছর তার মেয়েকে নাকোইল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ভুল সংশোধনের জন্য পিতা আবেদন করলেও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলা তা কর্ণপাত করেননি।

এদিকে এ ঘটনায় ঐশীর পিতা জেএম মোস্তাক আহমেদ ঝিনাইদহ দেওয়ানী আদালতে মামলা করেছেন। মামলায় শাহনাজ পারভীন, মামা রফিকুল ইসলাম, মামি কানিজ শাকিলা শারমীন, মধুপুর রাধাচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পশুপতি বিশ্বাস, নাকোইল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলাকে বিবাদী করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।