মানিকগঞ্জে বাবা-মাকে হত্যা : খুনি ছেলে পুলিশের গুলিতে নিহত

 

স্টাফ রিপোর্টার: মা-বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত এক ছেলে। পুলিশ খুনিকে ধরতে গেলে তিনি দু বছরের এক শিশুকে জিম্মি করে হত্যার হুমকি দেন। পরে পুলিশ গুলি চালালে গুলিতে তিনি নিহত হন। গতকাল রোববার সকালে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চরনীলটেক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সুফিয়া বেগম (৬০), মহর আলী পাটোয়ারী (৭০) ও সাইদুর রহমান (৩২)। পুলিশ মা-বাবা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, মহর আলী পাটোয়ারীর ছেলে সাইদুর রিকশা চালাতো। মাদকাসক্ত সাইদুর কয়েক বছর আগে বিয়ে করে। বিয়ের পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। এক পর্যায়ে স্ত্রী তাকে ত্যাগ করে।

সাইদুর কাজ-কর্ম বাদ দিয়ে নেশার দিকে ঝুঁকে পড়ে। এ নিয়ে বৃদ্ধ মা-বাবার সাথে তার প্রায়ই ঝগড়া হতো। কাজ করার কথা বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন এবং অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। জানা গেছে, গতকাল সকাল ১০টার দিকে মহর আলী ভাত খাচ্ছিলেন। এ সময় সাইদুর বড় একটি ছোড়া নিয়ে বাবাকে ধাওয়া করে। দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন মহর আলী। কিছুক্ষণ পর সাইদুর তাকে ধরে ফেলে এবং কুপিয়ে হত্যা করে। সাইদুরের মা এ দৃশ্য দেখে পালানোর চেষ্টা করলে তাকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়। এর পর সাইদুর ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। গ্রামবাসী ও পুলিশ তাকে ধরতে গেলে তিনি তার দু বছর বয়সী এক ভাগ্নেকে জিম্মি করে। ছোড়া ও টেঁটা নিয়ে অন্যদেরও হত্যা করতে উদ্যত হন তিনি। এ সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান সিংগাইর থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান। ফলে অনেক সময় লেগে যায় খুনিকে ধরতে। পুলিশ এক পর্যায়ে ঘরের ভেতর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে সাইদুর তখন এক হাতে শিশুটিকে কোলে নেয় এবং আরেক হাতে ছোড়াটি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। গ্রামবাসী ও পুলিশ তাকে ধাওয়া করে ধরার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। কিছু দূরে পড়ে থাকতে দেখা যায় সাইদুরের মৃতদেহ।

এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, কুকুর ছানাদের মতোই সাইদুর কুকুরের দুধ পান করতো এবং মানুষের সাথে কুকুরের মতোই আচরণ করতো। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সিংগাইর থানার ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, পুলিশের গুলিতে নয়, স্থানীয়দের ছোঁড়ার আঘাতে সে নিহত হয়েছে। এ ব্যাপারে পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।