গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী পৌরবাসীর এক যন্ত্রণার নাম শব্দ দূষণ। বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি মাইকের শব্দ দূষণ মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এর প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার সকালে হাসপাতাল বাজারে উচ্চশব্দের মাইকিং প্রতিরোধ করে একদল যুবক। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ইউএনও বলেছেন- মারাত্মক এই দূষণ বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, ‘একটি ধাড়ি ছাগল হারিয়ে গেছে’ রাত বারোটার দিকে আকস্মিক এমন মাইকিং শুনে হকচকিত পৌরবাসী। এতো উচ্চশব্দে মাইকিং করা হয় যাতে করো ঘুমিয়ে থাকার অবস্থা থাকে না। আবার ‘সবাই দেয় সব খবর, আমি দেই তরকারির খবর’ মাংস বিক্রির এমন মাইকিং তো হরহামেশাই হচ্ছে। সপ্তাহের অন্তত ৪-৫ দিন ‘কম দামে বরিশালের ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে’ এমন প্রচারণায় তো পৌরবাসীর জীবন আষ্টেপিষ্টে অবস্থা। এছাড়াও ডাক্তার, বিদ্যালয়-কলেজ ভর্তি, দোকানিদের প্রচারণাসহ নানা প্রচার-অপপ্রচারের মাইকিং এর শব্দ দূষণে পৌরবাসী এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে গাড়াডোব গ্রামের শফি উদ্দীন নামের এক পাখিভ্যান চালক হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করছিলেন। চোঙাওয়ালা মাইক উচ্চস্বরে বাজানো হচ্ছিলো। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন আশপাশের লোকজন। এ সময় গাংনী প্রেসক্লাবের সামনে একদল যুবক পাখিভ্যান চালককে থামায়। কিন্তু উচ্চস্বরের বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তোর মেলেনি। এ সময় সেখানে আকস্মিকভাবে পৌঁছান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান। তিনি পাখিভ্যানচালককে উচ্চস্বরের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। কিন্তু শব্দ দূষণের ব্যাপারে তার কোনো ধারণা নেই বলে ইউএনওকে জানান তিনি। তবে আর কখনো উচ্চশব্দে মাইক বাজাবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন পাখিভ্যান চালক।
গাংনী পৌর এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে বিদ্যালয়, কলেজ, হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু উচ্চস্বরের মাইকিং থামছে না। এতে হাসপাতালের রোগী ও বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা প্রতিনিয়ত মারাত্মক শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, শব্দ দূষণের ফলে কান ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা যেতে পারে। মানুষের শ্রবণশক্তিও আশঙ্কাজনকহারে কমছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাংনী শহরের কাশেম মাইক থেকে বেশি প্রচারণা চালানো হয়। অন্যান্য ডেকোরেটর ও ব্যক্তি মালিকানার মাইক থেকেও প্রচার করা হয়। কিন্তু মাইকের হর্ন হচ্ছে চোঙা। যার ফলে উচ্চ শব্দ সহজেই কানে গিয়ে বিধে। তাছাড়াও আইন লঙ্ঘন করে ভ্যান কিংবা যানবাহনের দুই দিকে দুটি মাইক হর্ন বাঁধা হয়। মানা হচ্ছে না শব্দের পরিমিত মাত্রা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান বলেন, ডেকোরেটর ও মাইক ব্যবসায়ীদের শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য চিঠি দেয়া হচ্ছে। তারা কিভাবে মাইক ব্যবহার করছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক পদক্ষেপে কাজ না হলে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।