মর্মান্তিক সড়কদুর্ঘটনা আলামীন-জেসমিনকেবিয়ের পীড়িতে বসতে দিলো না

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ব্যাংকার ইঞ্জিনিয়ার আলামীন এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্রী জেসমিনকে বিয়ের পীড়িতে বসতে দিলো না। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামের মৃত সোলাইমান ফারুকের পঞ্চম ছেলে ব্যাংকার ইঞ্জিনিয়ার আলামীনের সাথে যশোরের বসুন্দিয়া মধ্যপাড়ার আলহাজ মোস্তফা কামালের একমাত্র মেয়ে জেসমিন নাহারের বিয়ের দিন ধার্য ছিলো শুক্রবার। রোববার সকাল সাড়ে ন’টায় খুলনা থেকে বাগেরহাটের চিতলমারীতে শ্যালক আলামীনের বিয়ের উদ্দেশে বোনসহ দু ভায়রা, দু ভাগ্নে এবং বোনের শাশুড়িসহ মাইক্রোবাসযোগে যাত্রা করেন উলাসী সৃজনী সংঘের হরিণাকুণ্ডু অফিসের স্পন্সার অফিসার তাজিম উদ্দীন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে মোল্লারহাট শহরের ৫ কিলোমিটার পূর্বে সরকারি পুকুর পাড়ের নিকট বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মাইক্রোবাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মর্মান্তিকভাবে মারা যান বোনের শাশুড়ি শাহিদা বেগম (৫৯) এবং মাইক্রোচালক আব্দুল্লাহ (৪১)।

দুর্ঘটনার সময় মাইক্রোতে বিয়ে উপলক্ষে তিন সেট সোনার গয়না, তিনটি বিয়ের শাড়িসহ বিশটি শাড়ি, লক্ষাধিক টাকার কসমেটিক্স এবং নগদ লক্ষাধিক টাকা খোয়া যায়। সর্ব সাকুল্যে প্রায় দশ লাখ টাকার সমপরিমাণ জিনিসপত্র দুর্ঘটনার সুযোগে স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা লুটে নেয় বলে আলামীনের ভগ্নিপতি মাইক্রোযাত্রী তাজীম উদ্দীন জানান। তারও ডান পায়ে আঘাতের ফলে ভেঙে যায়। তিনি আরো জানান, তার মা শাহিদা বেগম মাইক্রোর যে পাশে বসা ছিলেন সেই পাশে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর মাইক্রোটি আঘাত করায় তার মায়ের মাথার খুলি বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ তার দু হাত এবং দু পা ভেঙে যায়। এছাড়া বড় ভায়রা ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল ইসলামের মাথায় আঘাতের ফলে মাথা ফেটে যায় এবং মিসেস শহীদের দু হাত, দু পা ভেঙে যাওয়াসহ মুখের সকল দাঁত পড়ে যায়। ভাগ্নে দুটিও কম বেশি আহত হয়। আহতদেরকে প্রথমে মোল্লারহাট হাসপাতালে, পরে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং সর্বশেষ সেখান থেকে রেফার করে খুলনার একটি বিশেষায়িত সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলেই শাহিদা বেগম এবং চালক আব্দুল্লাহ মারা যায়। উভয় পরিবারে বিয়ে উপলক্ষে প্রায় ৮’শ মেহমানকে দাওয়াত দেয়াসহ সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। সড়ক দুর্ঘটনা নিমিষেই বিয়ের আনন্দ বিষাদের ছায়ায় ঢেকে দিয়েছে। দুটি পরিবারেই চলছে শোকের বিরামহীন মাতম।