মধ্যযুগীয় বর্বরতা : প্রকাশ্যে দোকানে ভাঙচুর লুটপাট : উল্লাস

 

চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি ও কলোনিপাড়ার মধ্যে বিরোধ : হামলা পাল্টা হামলা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অদূরবর্তী বেলগাছি কর্নার হাউজে দিবালোকে হামলা চালিয়ে লুটপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। ঈদের পরদিন বুধবার বেলা ২টার দিকে কলোনিপাড়ার লোকজন সঙ্ঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ছিনিয়ে নেয়া মোবাইলফোন ফেরত দিলেও মেমোরি কার্ড না দেয়া নিয়ে বেলগাছি ও কলোনিপাড়ার দু দল যুবকের মধ্য সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে এ মামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বেলগাছি কর্নার হাউজের পার্শ্ববর্তী ইছাহকের হোটেলেও হামলা চালিয়ে আংশিক ভাঙচুর করেছে। ভাঙচুরের পর তারা উল্লাসও করে।

জানা গেছে, গত পরশু বুধবার বেলা ২টার দিকে কলোনিপাড়ার ২৫/৩০ জন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে বেলগাছির ইছাহককে খুঁজতে থাকে। হাসপাতালের অদূরবর্তী উপজেলা পরিষদ মোড়েই বেলগাছির ইছাহকের হোটেল। তাকে না পেয়ে পার্শ্ববর্তী বেলগাছি কর্নার হাউস নামের দোকানে নগ্ম হামলা চালায় তারা। এ সময় দোকান কর্মচারী শাহীন হামলাকারীদের পা ধরে রক্ষা পেলেও দোকানের ৪টি ফ্রিজ, দুটি ফটোস্ট্যাট মেশিন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দোকানের মালামার তছনছ করে। দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা হতবাক হয়ে পড়ে। দোকানে থাকা নগদ টাকাই শুধু লুটপাট করা হয়নি, ফ্রিজ ভাঙচুর করে ফ্রিজে থাকা আইসক্রিম যেমন বেহায়পনার মতো খেতে থাকে, তেমনই দোকানের চকলেটের বৈয়মগুলো থেকে চকলেট নিয়ে পকেটে ভোরতে থাকে কেউ কেউ। হামলাকারীদের তাণ্ডব দেখে মন্তব্য করতে গিয়ে অনেকেই বলেন, মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে কলোনির হামলাকারীরা। দোকানি বেলগাছির মতিয়ার রহমানের ছেলে মহিদুর রহমান মণ্টু মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বলা হয়েছে, ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুটপাট ও ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার মালামাল ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলো- কলোনির শহিদুল ইসলামের ছেলে ইকবাল (২৮), মৃত শুকুর আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (২৮) ও বেলগাছির মিয়া আহম্মেদের ছেলে হাসান (৪৮)।

কেন হামলা? কি নিয়ে দুটি মহল্লার মধ্যে বিরোধ? এ প্রশ্নের জবাব জানতে গেলে এলাকার একেকজন একেক রকম তথ্য দিয়েছে। কেউ বলেছে, ঈদের দিন সন্ধ্যার পর বেলগাছি ঈদগা মাঠের নিকট বেশ কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো। পটকা ফোটানোর পাশাপাশি এক পথচারী যুবকের নিকট থেকে মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। মোবাইলফোনটি ফিরিয়ে দিলেও মেমোরি কার্ড ফেরত না দিলে বিরোধ বাধে। এ নিয়ে বেলগাছি এ কলোনিপাড়ার কয়েক যুবকের মধ্যে বিরোধ বাধে। সালিসও বসে। ঈদের পরদিন সকাল থেকেই শুরু হয় বেলগাছি মোড়ে পাল্টা পাল্টি হামলা ও দোকান ভাঙচুরের ঘটনা। বেলগাছি মোড়ের কলোনিপাড়ার লোকজনের দোকানে হামলা চালানো হয়, কলোনিপাড়ার লোকজনও বেলগাছির লোকজনের দোকান ভাঙচুর করে। এরই এক পর্যায়ে কলোনিপাড়ার লোকজন ছুটে আসে উপজেলা পরিষদ মোড়ে। সেখানে বেলগাছির ইসাহককে খুঁজতে গিয়ে না পেয়ে বেলগাছি কর্নার হাউসে হামলা চালিয়ে লুটপাট, ভাঙচুর করে।