ভি.জে স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র আবির অপহৃত : তরুণ এক কৃষকেরও হদিস নেই

 

চুয়াডাঙ্গা নূরনগর থেকে নানাবাড়ি শিবপুরে বেড়াতে গিয়ে বিপত্তি : বিদেশ থেকে মামা আসার খবরেই ভাগ্নে অপহরণ!

 

ঘটনা স্থল থেকে ফিরে জিয়াউর রহমান জিয়া: চুয়াডাঙ্গা ভিজে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র নূরনগরের আবিরসহ শিবপুরের তরুণ এক কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে। গত রোববার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে আবিরের নানাবাড়ি শিবপুর থেকে আবির ও লিটনকে অপহরণ করা হয়। লিটনের বাড়িতে বসেই এরা টিভি দেখছিলো। এ সময় পানি খাওয়ার কথা বলে ১৪-১৫ জনের একদল অস্ত্রধারী বাড়িতে প্রবেশ করে। স্কুলছাত্র আবির ও লিটন ঘর থেকে বের হলে খাসকররার রাস্তা চিনিয়ে দেয়ার কথা বলে। রাস্তায় নিয়ে দুজনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়। অবশ্য অপহৃত লিটনের সাথে অপহরক চক্রের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্থানীয়দের ধারণা, আবিরের মামা ফারুক কুয়েত থেকে বাড়ি ফেরার খবর পেয়েই অপহরকচক্র মুক্তিপণের আশায় তার ভাগ্নে আবিরকে কৌশলে অপহরণ করে থাকতে পারে। পুলিশ অপহৃত দুজনকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অপহৃত স্কুলছাত্রসহ দুজনের একজনকেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মুক্তিপণের দাবিতে অপহরকচক্র যোগাযোগও করেনি। অবশ্য স্থানীয় একটি সূত্র বলেছে, মুক্তিপণ দাবি করা হলেও পরিবারের সদস্যরা অজানা আতঙ্কে মুখ খুলছে না। লিটন অপহরণ হয়েছে বলে দাবি করা হলেও তাকে সন্দেহের বাইরে রাখতে নারাজ স্থানীয় অনেকে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা নূরনগরের সুজন আলীর ছেলে আবির ওরফে আভির (১৩) চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। তার নানাবাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের কুতুবপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে। আবির তার মা আকলিমা খাতুনের সাথে মামাবাড়ি বেড়াতে যায়। গত রোববার রাতে সে প্রতিবেশী তরুণ কৃষক লিটনের বাড়িতে বসে টিভি দেখছিলো। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে একদল অস্ত্রধারী লিটনের বাড়িতে হানা দেয়। তারা পানি খাওয়ার কথা বললে আবির পানি দিতে ঘর থেকে বের হয়। এ সময় তাকে খাসকররার রাস্তা দেখিয়ে দেয়ার জন্য বলে অস্ত্রধারীরা। লিটন পিছু নেয়। পরে দুজনের একজনও বাড়ি ফেরেনি। তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আবিরের মা আকলিমা খাতুন বলেছেন, ছেলে আবির পাশের বাড়িতে টিভি দেখছিলো। এ সময় অস্ত্রধারীরা হানা দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। জানি না, আমার ছেলে কেমন আছে। যে কোনোমূল্যে আমি আমার ছেলেকে ফিরিয়ে পেতে চাই। আবিরের সাথে অপহৃত লিটন আমার প্রতিবেশী ভাই। লিটনকে আবির মামা বলেই ডাকে।

স্থানীয়রা বলেছে, রাতেই শম্ভুনগর ফাঁড়ি পুলিশকে জানানো হয়। শম্ভুনগর ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই রবীন্দ্রনাথ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালান। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সেকেন্ট অফিসার এসআই খলিলুর রহমান ও পার্শ্ববর্তী সরোজগঞ্জ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই সেকেন্দার আলীও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

প্রতিবেশীদের একজন জানান, গত ৩০ মে আবিরের প্রবাসী মামা ফারুক হোসেন কুয়েত থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এ খবর পেয়েই অপহরকচক্র অপহরণের পর মুক্তিপণের ফাঁদ পেতে থাকতে পারে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত ছিলো। উদ্ধারের খবর মেলেনি।

ছবি দেওয়া আছে : আভিরের ও দু পরিবারের