ভালোবাসা দিবস তরুণদের ভাসাছে উগ্রতায়

চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে বিয়ের হিড়িক : ফুলের দোকানে ভিড় 

 

স্টাফ রিপোর্টার: ভালোবাসা দিবসে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিয়ের ধুম পড়ে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বিয়ের রেওয়াজ শুধু শহরে নয়, গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। জীবননগরে গরুর গাড়ি নিয়ে বিয়ে দিবসটি যেনো নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ যেনো এই সেদিনের হারানো ঐতিহ্য ফেরানো। ভালোবাসার আবীর ছড়িয়েছে তরুণ তরুণেরা। অসংখ্য দম্পতি এদিনে একটু ভালোবাসার ছন্দ খুঁজতে ঘুরেছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। বসেছেন ছাদেও। ভালোবাসা দিবসে ঘুমের পিল একটু বেশি দিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারানো পিতাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখতেও ছাড়েনি মতলববাজ ছেলে। এ অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তাদের কাছে ভালোবাসার বদলে সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে তা হজমের হাজমলাই গুরুত্বপূর্ণ বটে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক পিতার পাশে জমিবঞ্চিত কন্যার উক্তি শুনে কয়েকজন এরকমই মন্তব্য করে বলেছেন, তালতলার ওই তিন ছেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

গতকাল ছিলো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এদিনে রাস্তায়, চিত্তবিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিলো উপচেপড়া ভিড়। খোঁপায় গাঁদা ফুল, পরনে বাসন্তী রঙের শাড়ি, ডান হাত স্বামীর মুঠোয়। বা হাতে ছয় বছরের মেয়ের হাত ধরে চন্দ্রিমা উদ্যানে হাঁটছেন কাকলী। এ দৃশ্য ছিলো ডানে-বামে সামনে-পেছনে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে ফুলের দোকানগুলোতে ছিলো তরুণ-তরুণীদের ভিড়। এ বছর ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ‘রোজ ডে’, ৮ ফেব্রুয়ারি প্রপোজ ডে, ৯ ফেব্রুয়ারি চকোলেট ডে, ১০ ফেব্রুয়ারি টেডি ডে, ১১ ফেব্রুয়ারি, প্রমিজ ডে, ১২ ফেব্রুয়ারি হাগ ডে, ১৩ ফেব্রুয়ারি কিস ডে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন শুরু হয়েছে। আগের দিবসগুলো ঘটা করে পালিত না হলেও গতকাল ভ্যালেন্টাইনস ডে বিপুল আগ্রহ নিয়েই পালন করেছেন তরুণ-তরুণীরা। আগ্রহ নিয়ে পালন করতে গিয়ে প্রেমিকের সাথে দেখা করে শেষ পর্যন্ত বন্দি হয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে মমতাজ। সে চুয়াডাঙ্গা কুশোডাঙ্গার মেয়ে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী। ওর আর কী দোষ। কালের বিবর্তনে হৃদয়ে লাগা আধুনিকতার ছোঁয়া উসকে দিয়েছে অপ্রাপ্ত বয়সেই সহপাঠীর সাথে বিশেষ সম্পর্কের। গ্রামেরই স্কুলপাড়ার সহপাঠীর সাথে দেখা করতে গেলে স্থানীয় কিছু যুবক তাদের ধরে অভিভাবকদের খবর দেয়। অভিভাবকেরা স্কুলছাত্রীকে নিয়ে ঘরে আটকে রাখেন। বিকেলে ঘরের আড়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালায়। এদিকে ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে কয়েক তরুণী ঝরিয়েছে অশ্রু। ক’দিন আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ছয়ঘরিয়ার শিমুল হত্যার শিকার হয়। প্রেমের কারণেই হত্যা করা হয়েছে তাকে। তার প্রেমিকাসহ প্রেমিকার বান্ধবীরা গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গের সামনে এসে ফুল রাখে। অশ্রু ঝরায় গোপনে। লোকলজ্জার ভয়ে ওরা প্রেমিক শিমুলের কবরে যায়নি। তাকে যেখানে হত্যা করে পুঁতে রাখা হয়েছিলো সেখানেও নয়। যেখানে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, সেখানে তার ছোঁয়া লেগে আছে। সে কারণেই প্রেমিকা এসেছিলো ময়নাতদন্তের সেই ঘরে। চুয়াডাঙ্গার সকল ফুলের দোকানগুলোতে ছিলো ভিড়। ফুলের দামও ছিলো চড়া। শিশুস্বর্গ, পুলিশ পার্কেই শুধু নয়, ভিড় ছিলো যেন রাস্তাঘাটেও। মা ভালোবেসেছে সন্তানকে, সন্তান মাকে, পিতা সন্তানকে, সন্তান পিতাকে। ভালোবাসা দিবসটি একদিনের রূপক হলেও এদিন সকলকে ভালোবাসারই যেনো শিক্ষা দিয়েছে। অবশ্য তিক্তও করেছে অনেকের। প্রেমিকার দুলাভাই এলাকার বড়ভাইয়ের কাছে নালিশ করার কারণে প্রেমিক চাচার বাড়িতে গিয়ে ইঁদুর মারা বিষ খেয়ে গতরাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সে নিজেই হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার বাড়ি গুলশানপাড়ার বুদু মিয়ার আমবাগানে জানিয়ে সে বলেছে, তার নাম অন্তর। অতোটুকু বয়সে প্রেম কেন? জবাব দেয়নি। এসব দেখে সচেতন অনেকেই বলেছেন, তথ্য প্রযুক্তির যুগে যে উগ্রতা বেড়েছে তা রোধে ওদেরকে সচেতন করার বিকল্প নেই। গড্ডালিকায় গা না ভাসিয়ে অভিভাবকদেরই অধিক দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রাপ্ত বয়সের আগে অভিভাবকদেরই স্নেময় ভালোবাসা দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখতে হবে। তা না হলে সমাজে হালে আসা ভালোবাসা দিবস বানের জলের মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলে মেয়েদের।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে জীবননগর উপজেলায় এক বর থরে থরে ফুলে সজ্জিত গরু গাড়ির বহরে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে এসে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিয়ে শেষে বর বেনজির তার নববধূ অনুকে গরু গাড়িতে নিয়ে রাজার বেশে বাড়ি ফিরে নব প্রজন্মের সামনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন।

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে উপজেলার দেহাটি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বেনজির আহাম্মেদ গতকাল বিকেলে ফুলে সজ্জিত ৬টি গরু গাড়িযোগে জীবননগর শহরের হাসপাতালপাড়ার আনোয়ার হোসেন খানের মেয়ের আফসানা খানম অনুকে বিয়ে করতে আসে। এ সময় রাস্তার দু পাশের দাঁড়ানো মানুষ বরসহ বরযাত্রীদের করতালি দিয়ে অভিনন্দিত করে।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে গাংনীতে উদযাপন করা হলো বিশ্ব ভালোবাস দিবস। একে অপরের মধ্যে ফুল বিনিময়ের পাশাপাশি স্বজনদের ঘুরে বেড়িয়ে দিন পার করেছেন অনেকেই। বিকেল থেকেই গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয় ভালোবাসা মেলা। গাংনী প্রগতি ক্লাব আয়োজিত এ মেলায় সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন বিভিন্ন এলাকার শিল্পীরা। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন গাংনীর কৃতীসন্তান বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম সঙ্গীত শিল্পী বিপ্লব রায়হান। পরে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মাটি আইনুলের মাটি ব্যান্ডের শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ভালোবাসার দিনে অমিল ভালোবাসার গোলাপ। ঝিনাইদহের সর্বত্রই আকাল গোলাপের। যেটুকু যা মিলছে, তার দামও খুব চড়া। তাই এ ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে ভরসা রজনীগন্ধা গাঁদা আর গ্লাডিওলাস। অথচ ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে গোলাপেরই চাহিদা বেশি। ফুলের চাষ বাড়লেও চাহিদা আরও বেড়ে যাওয়ায় আজ অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য গোলাপ। তাই বলে দিবস উদযাপন বন্ধ থাকবে? বছর ঘুরে ফের হাজির প্রেমের পার্বণ! ভালোবাসার দিন ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে পছন্দের মানুষকে তাক লাগানো উপহার দিতে তৈরি তরুণ-তরুণীরাও। পুরনো প্রেমকে ঝালিয়ে নিতে আর নতুন প্রেমের খাতা খুলতেই যেন হাজির এ বিশেষ দিন। এখন মফসসলেও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পাল্টেছে ভ্যালেন্টাইন্স ডের উপহারের তালিকা। টেডিবিয়ার থেকে কস্টিউম জুয়েলারি, সবই ঢুকে পড়েছে তাতে। তবে চিরায়ত লাল গোলাপের চাহিদায় ভাটা পড়েনি।

ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, এবারও ভালোবাসা দিবসের আগে গোলাপের চাহিদা তুঙ্গে। বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস একদিন আগে আর পরে এসেছে। সর্বপরী রাজনীতির পরিস্থিতি ভালো থাকায় ভিন্ন আমেজ পেয়েছে এবার এ দিবস। তবে বাজারে গোলাপের যোগান কম থাকায় বেড়েছে দাম। শুক্রবার এক-একটি ছোট গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। চাহিদা আরও বাড়বে।

ঝিনাইদহ শহরের এক ফুল ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, এ সময় গোলাপের দাম একটু বেশিই থাকে। জোগান কম থাকলে দাম তো বাড়বেই। আমাদেরই বেশি দামে গোলাপ কিনতে হচ্ছে। অপর এক ফুল ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গতদিন যে গোলাপ ৭-৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আজ তার দাম ১৫-২০ টাকা! এ ব্যবসায়ী হেসে বলেন, ভালোবাসার দিনে প্রেমিকার সামনে গোলাপের দরদাম হয় না।

ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় এখন গোলাপের চাষ হচ্ছে। তা চাহিদার তুলনায় কম। প্রতিবেশী জেলা যশোর ফুলের স্বর্গরাজ্য। কিন্তু বসন্তের মাতাল সমিরণের সাথে উড়ে গেছে সব ফুল। চার দিন আগেই সব ফুল যাত্রা করেছে রাজধানীর উদ্দেশে। গোলাপচাষি মোমিনুর রহমান বলেন, এ সময়ে গোলাপের চাহিদাও খুব বেশি থাকে। ক্ষেতে থাকতেই আগাম বায়না দিয়ে গেছে ফড়িয়ারা। শুক্রবার সকালে শহরের বিভিন্ন বিপণিতে কলেজ পড়ুয়া তরুণী থেকে সব শ্রেণির যুবকের মতো অসংখ্য ক্রেতার ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। সদ্য উচ্চ মাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোনো মেহমুদ জিসান  বলেন, ভালোবাসার আবার কোনো দিন হয় নাকি! প্রিয়জনকে সারা বছরই ভালোবাসা যায়! তবে কলেজছাত্রী ফারজানা ইসলাম মানছেন, ভ্যালেন্টাইন্স ডে সত্যিই স্পেশাল। বিশেষ দিনে যদি কাউকে ভালোবাসার বার্তা দেয়া যায় মন্দ কি!

ঝিনাইদহের অঙ্কুর নাট্য একাডেমীর পরিচালক নাজিম উদ্দীন জুলিয়াস বলছিলেন, ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে মাতামাতিটা ক্রমেই বাড়ছে। তবে ভালোবাসার কোনো দিন-সপ্তাহ মাস থাকতে পারে না। পেশায় শিক্ষক নিজাম উদ্দীনের রাশভারি মন্তব্য, আসলে যেভাবে হিংসা-বিদ্বেষ বাড়ছে, সেখানে ভালোবাসা দিবস যেন শান্তির দূত!

দেখা গেছে, মনের মানুষকে দেয়ার জন্য এ দিন কেউ কিনেছেন শো-পিস, ব্যাগ, কাপ ও কানের দুল। কেউ বা টেডিবিয়ার, আংটি, কস্টিউম জুয়েলারি। ঝিনাইদহ শহরের ফুলঘরের মালিক রবিউল ইসলাম বলেন, এ সময় গিফেটর একটু চাহিদা থাকেই। আগের থেকে এখন উপহারের তালিকাও পাল্টেছে। নতুন নতুন আইটেম এসেছে। কার্ড দেয়া-নেয়া, এসএমএস-ই-মেইল চালাচালির সাথে উপহার হিসেবে পারফিউম, লিপস্টিক, চকোলেট বক্স, শো-পিস অনেকেই দেন। এবারও উপহার কিনতে ভালোই ভিড়  হচ্ছে।, বিশেষ এ দিনে অনেকেই পার্কে গিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। তাই দিনটি উদযাপন করতে যেন তৈরি শহর এবং শহরতলির পার্কগুলোও। কলেজ ক্যাম্পাস নদীর ধার মহাসড়কের আশপাশ হোটেল-রেস্তরা মাঠসহ পার্কে প্রচুর লোকজন বেড়াতে আসছেন। পরিবার-পরিজন, বন্ধু মিলে দিনভর চলে আড্ডা-হইহুল্লোড়। বন্ধের দিন হওয়ায় আরও জমেছে ভালোবাসাবাসি দিবস।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর আরটি কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম। স্যারের কাছে প্রশ্ন, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র তাৎপর্যটা ঠিক কী? উত্তর, সেটা তৃতীয় শতাব্দীর কথা। রোমে তখন দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের রাজত্ব। তিনি মনে করতেন, অবিবাহিত ছেলেরা ভালো সৈনিক হতে পারে। তাই তিনি তরুণদের বিয়ে নিষিদ্ধ করেন। সম্রাটের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন এক সন্ন্যাসী। তিনি লুকিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে শুরু করেন। ঘটনার কথা জানতে পেরে ওই সন্ন্যাসীর মৃত্যুদণ্ড দেন সম্রাট। ওই সন্ন্যাসীর নাম ছিলো ভ্যালেন্টাইন। তারপর থেকেই ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন শুরু হয় বলে মনে করা হয়।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, ভালোবাসার ফুল ফুটাতে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে মেহেরপুরে তরুন-তরুণীরা মেতে ছিলো। গতকাল শুক্রবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে। ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ফুল কিনে উপহার দিতে অগণিত প্রেমিক-প্রেমিকা মেহেরপুরের বিভিন্ন ফুলের দোকানে জমিয়ে ছিলো ভীড়।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে দোকানিরাও ব্যস্ত সময় পার করেছে এদিনের জন্য ফুলের পসরা সাজাতে। ভালোবাসাকে মধুময় করতে দূরের বন্ধু-বান্ধবী ও স্বজনদেরকে মোবাইল ম্যাসেস, ইন্টারনেটের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মেহেরপুরের অনেক যুবতীকে শ্যালোয়ার-কামিজ ছেড়ে হলুদ অথবা গোলাপী রঙের শাড়ি পরতে দেখা গেছে। হাতে রেখেছে প্রিয় মানুষটির জন্য একটি গোলাপ কিংবা রজনী গন্ধার স্টিক। অপরদিকে যুবকরাও নতুন সাজে সেজে তাদের হৃদয়ের মানুষটিকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে থেকেছে একটি গোলাপ কিংবা রজনী গন্ধার স্টিক হাতে নিয়ে। ঘুরতে দেখা গেছে রিকসা কিংবা ইজি-বাইকে নতুন সাজে নব দম্পতি অথবা প্রেমিক-প্রেমিকাকে। বুঝে উঠতে না পারলেও শিশু-কিশোরাও যেন মেতে ছিলো দিনটি নিয়ে। এছাড়াও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো উৎসবে আনন্দে মেতে উঠেছিলো।

এদিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরেও প্রচুর ফুল কেনা-বেচা হয়েছে। মেহেরপুর শহরের ইত্যাদি ফুলঘর ও কাঁসারী বাজারের স্বর্ণালী ফুলঘরসহ শহরে বেশ কয়েকটি দোকানে প্রচুর ফুল বিক্রি হয়েছে। ইত্যাদি ফুল ঘর জানিয়েছে এদিন তাদের ৬ হাজার গোলাপ ফুল বিক্রি হয়েছে। সাথে ছিলো অন্যান্য ফুলও। প্রতিটি ফুল ৩০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়েছে।