বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কা ॥ আলমসাধুচালক আরোহীসহ আহত ৮

 

চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের আন্তঃজেলা লোকাল বাস চালকলদের স্বেচ্ছাচারিতা চরমে ॥ বিরূপ সমালোচনা

স্টাফ রিপোর্টার: শুরুতে ধীর গতি, শেষে বেপরোয়া। এ কারণে মাঝে মাঝেই ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা বাস টার্মিনালের অদূরে যাত্রীবহন করা আলমসাধুর সাথে ধাক্কা মেরে খাদে পড়েছে বাস। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের এক ছাত্রীসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ৮ জন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও আলমসাধু গতরাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিলো। তবে বাসের চালককে প্রকাশ্যে দেখা মেলেনি।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসের প্রতিটি বাস ছাড়ার সময় থেকে শেষ গন্তব্যে পৌঁছুনোর নির্ধারিত সময় ৫৫ মিনিট। চুয়াডাঙ্গা থেকে যে বাস ঝিনাইদহের উদেশে ছেড়ে যায় তা শুরু থেকে হলিধানী পর্যন্ত ধিমে তালে চলে, একইভাবে ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হওয়া বাসও ডিঙ্গেদহ পর্যন্ত পৌঁছুই হেলে দুলে। তাতেই নির্ধারিত সময় ফুরিয়ে আসে। ফলে ডিঙ্গেদহ থেকে চুয়াডাঙ্গা টার্মিনালে পৌঁছুনোর সময় বাস চালানো হয় বেপরোয়াগতিতে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যে বাসটির (যশোর-জ-০৪-০০৯৩) চুয়াডাঙ্গা বাসটার্মিনালে পৌঁছুনোর অদূরেই মামুন ফিলিং স্টেশনের সামনে সড়কের টাল খাওয়া স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারায় চালক। প্রতক্ষদর্শীরা বলেছেন, বেপরোয়া গতিতে ছোটার কারণেই বাসচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিকে গিয়ে বিপরীতমুখি আলমসাধুর ধাক্কা মারে। বাসোর ধাক্কায় আলমসুধ উল্টে পড়ে খাদে। চালক ও দু আরোহী গুরুতর অহত হন। এক আরোহী গাছের ডালে চাপা পড়ে কাতরাতে থাকেন। বাসের যাত্রীদের মধ্যে কলেজছাত্রীসহ ৫ জন আহত হন।
আহতরা হলেন- শ্যালোইঞ্জিনচালিত আলমসাধুচালক চুয়াডাঙ্গা নতুন ভা-ারদহ কাটাখালীপাড়ার মশিউর রহমান (৩০)। সে মৃত আফছার আলীর ছেলে। আরোহী ফলব্যবসায়ী ফরিদপুর শোভারন সুইচগেটপাড়ার ইনতাজ শেখ (৪০) ও চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার পল্লি আইলহাস বাজারপাড়ার উকিল (৩৫)। সে কেয়ামত আলীর ছেলে। শ্বশুরবাড়ি রামনগর কলাবাড়ি থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এখন হাসপতাালে। ইন্তাজ আলীকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া বাসযাত্রীদের মধ্যে দামুড়হুদা গুলশানপাড়ার নজরুল ইসলামের মেয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্রী সিনথিয়া ইসলাম নদীকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকি ৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এরা হলেন- ঝিনাইদহ বিসিকপাড়ার শহিদুল ইসলাম (৩৫), ঝিনাইদহ চাকলাপাড়ার মিজানুর রহমান (২২), একইপাড়ার হাবিবুর রহমান (২১) ও ইমরান হোসেন (২২)। এরা বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি।
দুর্ঘটনার দৃশ্য দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, সড়কে অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য যখন দোষারোপ করা হয় শ্যালোইঞ্জিন চালত অবৈধ যানের, তখন বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পাওয়ার আশায় শুরুতে ধীরগতি ও পরে জরিমানা বাঁচাতে দ্রুতগতির কারণে হরহামেশাই ঘটনা দুর্ঘটনার দায় নেবেন কে? ভেবে দেখবে কি বাস মালিক সমিতি?