বেগমপুর তিতুদহ ও মোমিনপুর ইউপির ৩ হাজার পরিবার বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা

চুয়াডাঙ্গায় পদ্মবিলা ইউপিতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হচ্ছে আজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আজ। তবে তিনটি ইউনিয়নে  স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য সদস্যদের মতবিরোধের কারণে হতদরিদ্রদের নামের তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় বেগমপুর, তিতুদহ ও মোমিনপুর ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার চলতি সেপ্টেম্বর মাসের বরাদ্দ চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছে প্রকৃত হতদরিদ্ররা।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল এই পাঁচ মাস ইউনিয়ন পর্যায়ে তালিকাভুক্ত হতদরিদ্র পরিবার ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল পাবে। তবে জেলার চার পৌরসভার কেউই ১০ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন না। তালিকাভুক্ত ডিলারদের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। সরকার ৩৫ টাকা ৬৩ পয়সার চাল খাদ্য বিভাগ প্রতিকেজি সাড়ে ৮ টাকা করে ডিলারদের মধ্যে বিক্রি করছে।

সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে সুবিধাভোগী ৬ হাজার ৯৬৬টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে আজ বুধবার সকাল ১০টায় পদ্মবিলা ইউনিয়নের কুশোডাঙ্গায় চাল বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। এই ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার হিসেবে রয়েছেন পল্লি সমবায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আবু হাসনাত শাহরিয়ার।

পরদিন বৃহস্পতিবার কুতুবপুরে ১ হাজার ৪১ পরিবার, আলুকদিয়ায় ৮৮০ পরিবার ও শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নে  ১ হাজার ৪১০ পরিবারের মাঝে চাল বিক্রি করা হবে। ট্যাগ অফিসার হিসেবে কুতুবপুর ইউপিতে সদর উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, আলুকদিয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী নজিবর রহমান ও শঙ্করচন্দ্রে বিআরডিবি কর্মকর্তা বাহাউল ইসলাম দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে যে তিনটি ইউনিয়নে নামের তালিকা চূড়ান্ত হয়নি ওই তিনটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার হিসেবে বেগমপুরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, তিতুদহে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তরুণ কুমার দাস ও মোমিনপুরে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল সামী দায়িত্ব পালন করছেন। ট্যাগ অফিসাররাই ইউনিয়ন পর্যায়ে চাল বিক্রি কর্মসূচির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ এই তিনটি ইউনিয়নের হতদরিদ্র পরিবারের নামের তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় চলতি সেপ্টেম্বর মাসের বরাদ্দ থেকে ২ হাজার ৯৯৪ পরিবার বঞ্চিত হচ্ছে।

ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতি ট্যাগ অফিসার, সদস্য সচিব হিসেবে ইউপি সচিব, সদস্য হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার ও দুইজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। কিন্তু বেগমপুর ও তিতুদহ ইউপিতে অতিরিক্ত আরও দুইজন গণ্যমান্য ব্যক্তি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বেগমপুর ইউপিতে গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে মো. হামিদুল্লাহ, মিজানুর রহমান, আব্বাস উদ্দিন ও হাবিবুর রহমান কাজল অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তিতুদহ ইউপিতে মিজানুর রহমান টিপু, মোকাদ্দেস হোসেন, গিয়াস উদ্দিন ও শাহ আলম অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। মোমিনপুর ইউপিতে নবী ছদ্দিন মণ্ডল ও খালিদ হাসান মিলন রয়েছেন। এসব নেতাদের কমিটি অন্তর্ভুক্তর ফলে সমস্যা সমাধোনের চেয়ে আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিরোধের কারণে চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে ৩ হাজার পরিবার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিএম মুশফিকুর রহমান জানান, বেগমপুর, তিতুদহ ও মোমিনপুর এ তিনটি ইউনিয়নে হতদরিদ্র পরিবারের নামের চূড়ান্ত তালিকা হাতে না পেলে চলতি সেপ্টেম্বর মাসের বরাদ্দ চাল থেকে বঞ্চিত হবে ৩ হাজার পরিবার। পদ্মবিলা ইউনিয়নের কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে সদর উপজেলার চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু হবে। পরদিন থেকে আরও ৩টি ইউনিয়নে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে।