বিয়ের প্রলোভনে স্কুলছাত্রীর দেহভোগের পর অন্তঃসত্ত্বা : অবশেষে বিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা বেগমপুর ঝাঁজরি গ্রামের অন্তঃসত্তা স্কুলছাত্রীকে অবশেষে বিয়ে করেছে অভিযুক্ত জাহিরুল। গতকাল বুধবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে জাহিরুলের পিতা-মাতাকে বোঝানোর পর তারা বিয়েতে রাজি হয়। তাৎক্ষণিক লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় কাজি ডেকে দেড় লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে পড়ানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের ঝাঁজরি বসতিপাড়া দরিদ্র মানিক হোসেনের মেয়ে পাপিয়ার সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলে একই পাড়ার ফজলুর হোসেনের ছেলে জাহিরুল ইসলাম। জাহিরুল বিভিন্ন সময় পাপিয়াকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দেহভোগ করে। এ ঘটনায় পাপিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বা পাপিয়া জাহিরুলকে জানালে বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে গ্রামে জানাজানি হলে কয়েক দফা সালিসও করা হয়।  হয়নি সুরাহা। স্কুলছাত্রীর অনাগত সন্তান নষ্ট করতে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে জাহিরুল। ভেস্তে যায় প্রেমসম্পর্ক। স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বার ঘটনাটি দিনদিন জানাজানি হয় গোটা এলাকায়। বিয়ের দাবিতে অনড় অবস্থানে থাকে স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারের লোকজন। অভিযুক্ত লম্পট জাহিরুল ও তার পরিবারের লোকজন টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে। গ্রামে কয়েক দফা বসে সালিস বৈঠক। কোনো বৈঠকই সমাধানে পৌঁছুতে পারেননি গ্রাম্যমাতবররা। সর্বশেষ সালিস বৈঠকে জাহিরুলের পিতা ফজু চ্যালেঞ্জ করে বলেন, অন্তঃসত্ত্বার ঘটনাটি মিথ্যা। তার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্যই মিথ্যা নাটক সাজানো হয়েছে বলেও দাবি তোলেন। ফজুর এ চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতেই গ্রামবাসী ও জাহিরুলের পিতা গতপরশু রোববার স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান চুয়াডাঙ্গা শহরে। সেখানে স্মৃতি প্যাথলজি ও ফেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তারি পরীক্ষা করলে শেষ পর্যন্ত পরিষ্কার হয় স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা। ডাক্তারি পরীক্ষায় অন্তঃসত্ত্বার প্রমাণ মিললে ফের বেকে বসেছে জাহিরুল ও তার পরিবারের লোকজন। বিভিন্ন ধরনের ছলচাতুরি এবং স্কুলছাত্রী দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় হুমকি-ধামকি দিতে থাকে।

এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার দৃষ্টিগোচর হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে লোকমোর্চার একটি টিম ঝাঁজরি গ্রামে উপস্থিত হয়ে পাপিয়ার কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনেন। পরে জাহিরুলের বাড়িতে ফের উপস্থিত হয়ে তার পিতা ফজলুর হোসেন ও জাহিরুলকে বোঝানোর পর তারা বিয়েতে রাজি হলে লোকমোর্চার উপস্থিতিতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে গ্রামের ধুম পড়ে পাপিয়া ও জাহিরুলের বিয়ে। বেশ আনন্দ উল্লাসের সাথে অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় কাজি ডেকে বিয়ে দেয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেন পিপি, সাংগঠনিক সম্পাদক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর বেগম, নির্বাহী সদস্য অ্যাড. মানিক আকবর, আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, লায়লা শিরিন ও জেলা লোকমোর্চা সচিব শাহানাজ পারভীন শান্তি।