বিষপানের রোগীর ভুল চিকিৎসা : হাতুড়ে ডাক্তারের সরল স্বীকারোক্তি

 

ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে : বিয়ের দু মাসের মাথায় স্বামী গৃহে ফিরতে অস্বীকৃতির পর আত্মহত্যার অপচেষ্টা

 

স্টাফ রিপোর্টার: বিষপান করা রোগীকে আনাড়িভাবে ওয়াশ করায় হাতুড়ি চিকিৎসক তেঘরিয়া মুচিপাড়া বাজারের মতিয়ার পড়েছে বেকায়দায়। তার কারণেই বিষপানের রোগী শান্তনা মরতে বসেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এরকমই মন্তব্য করে বলেছেন, বিষপান করা রোগী শান্তনাকে এমনভাবে ওয়াশ করা হয়েছে, যে তার ফুঁসফুঁসে পানি জমে গেছে। ফুঁসফুঁসে পানির কারণেই মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহের জয়নুল আবেদীনের মেয়ে শান্তনাকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হয়। দু মাস আগে বিয়ে হয় ঝিনাইদহ কোর্টচাঁদপুরের ছাবদালপুর বহিরগাছি গ্রামের গাজী রহমানের সাথে। বিয়ের পর শান্তনা স্বামীগৃহে শান্তি খুঁজতে থাকে। দু মাসে পায়নি। সে তার পিতার বাড়ি ফেরে। স্বামীর বাড়ি ফিরত অস্বীকৃতি জানায়। পিতাসহ পরিবারের লোকজন চাপাচাপি শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে গতকাল বুধবার পিতার বাড়িতেই শান্তনা বিষপান করে। তাকে হাসপাতালে নেয়ার বদলে নেয়া হয় তেঘরি মুচিপাড়া বাজারের হাতুড়ে চিকিৎসক মতিয়ারের কাছে। মতিয়ার ওয়াশ করে। অবস্থার অবনতি হলে হাতুড়ে চিকিৎসক মতিয়ারই সাথে করে রোগী নেয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরএমও রোগী দেখেই চমকে ওঠেন। তিনি বলেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর। বিষপানে যতোটা না সে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছেলো তার চেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে মধ্যে ভুল ওয়াশের কারণে।

তিনি বলেন, পাকস্থলি থেকে বিষ তুলতে গিয়ে ভুলের কারণে রোগীর ফুঁসফুঁসে পানি জমে। বিষ উঠলেও ফুঁসফুঁসে পানির কারণেই তার মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে গেছে কয়েকগুন। অবস্থা আশঙ্কাজনক। শান্তনাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। অবস্থা গুরুতর। হাসপাতালে নেয়ার পর হাতুড়ে চিকিৎসক মতিয়ার দ্রুত সটকে পড়ার চেস্টা করেন। এ সময় তার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসক হিসেবে কোনো ডিগ্রি নেই। শিখছি। ওয়াশ করলেন কেন? এর জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছে রোগী আসে। অনুরোধ করে। অনুরোধের কারণেই চেষ্টা করে দিখি। চেষ্টা করতে গিয়ে যদি ভুল হয়ে যায় তা হলে আর আমার কি করার আছে বলুন!