বিধবার সম্পত্তি কৌশলে রেজিস্ট্রি করে তাকে ভিটেছাড়া করার অপচেষ্টা : অভিযুক্ত খবির উদ্দীন : গাংনীর কাজিপুরে মা-মেয়ে গৃহবন্দি!

 

গাংনী প্রতিনিধি: প্রতিপক্ষের লোকজনের অব্যাহত হুমকি ও হামলার আশঙ্কায় এক বিধবা বৃদ্ধাতার মেয়েকে নিয়ে গৃহবন্দি রয়েছেন। এঘটনাটি মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে। এ তথ্য জানিয়ে খবির উদ্দীন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জমিজমা জাল করে বিধবাকে বাড়িছাড়া করার ষড়যন্ত্রে করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, প্রায় ২৫ বছর আগে কাজিপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের বাড়ির রাখাল ছিলেন এইক গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে খবির উদ্দীন। আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী আশরাফন নেছা খবির উদ্দীনকে ছেলের মতোই দেখতেন। কিন্তু খবির উদ্দীনের কুনজর পড়ে বিধবার সম্পত্তির দিকে। এক পর্যায়ে বিধবার আড়াই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে অপকৌশলে নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেয় খবির।

আব্দুস সাত্তার মৃত্যুর আগে মাঠের ১২১৪১ ও ১২১৯৮ দাগের ৭৭ শতক জমি স্ত্রী আশরাফন নেছার নামে রেজিস্ট্রি দিয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে। ওই জমি বর্গা নেয় খবির উদ্দীন। কিন্তু অপকৌশলে বৃদ্ধা আশরাফন নেছার কাছ থেকে বায়না নামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আদালতে মামলা দায়ের করে নোটিশও আটকে রাখে খবির উদ্দীন। পরবর্তীতের আদালতের একতরফা রায়ে আব্দুস সাত্তারের প্রথম স্ত্রীর ছেলে-মেয়ের কাছ থেকে ওই জমি রেজিস্ট্রি নেয় খবির। সব সম্পত্তি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে বিধবা বৃদ্ধা আশরাফন নেছা ও তার দু মেয়ের।

এদিকে নিরুপায় বিধবার পাশে এসে দাঁড়ায় গ্রামের কিছু প্রতিবাদী মানুষ। তাদের সহায়তায় গত ২২ জুন জমির দখল নিতে গেলে খবির উদ্দীন ও তার লোকজন তাদের মারধর করে আটকে রাখে। পরে গাংনী থানা পুলিশ আশরাফন নেছা ও তার মেয়েকে উদ্ধার করার পাশাপাশি খবির উদ্দীনের জামাইকে আটক করে। থানায় মামলা দায়ের করেন আশরাফন নেছা। মামলার পর থেকেই প্রতিশোধ নিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে খবির। বিধবাকে ভিটেছাড়া করার হুমকি দেয়। বাড়ির বাইরে এলেই বৃদ্ধা ও তার মেয়েকে প্রাণনাশেরও হুমকি অব্যাহত রয়েছে।

খবির উদ্দীন সম্পর্কে এলাকায় খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেছে তার বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ। ১৯৯০ সালে জাল টাকাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় খবির। তার দাদার ছয় বিঘা জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। গ্রাম্য সালিসে অবশ্য কিছু জমি ফেরত দেয়। ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে সে দল পরিবর্তন করে এলাকার স্বঘোষিত নেতাবনে যায়। বর্তমানে তার নামে গাংনী থানায় চারটি মামলা রয়েছে। হরতাল-অবরোধের সময় সরকারি গাছ কাটা, বোমা বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন ঘটনার মামলার আসামি সে।

খবির উদ্দীনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম বলেন, তার নামে কয়েকটি মামলাসহ অসংখ্য অপরাধের অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। বৃদ্ধা আশরাফন নেছা ও তার পরিবারের লোকজনের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।