বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণসহ ৫ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

 

স্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণসহ ৫টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ৩৫৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, ২০১৮ সাল নাগাদ পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বর্ধিত বিদ্যুত চাহিদা তৈরি হবে। এজন্য দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ফলে ওই অঞ্চলের ৫২ লাখ মানুষ বিদ্যুত সেবার আওতায় আসবে।  তিনি বলেন, ওয়েস্ট  জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অধীন এক হাজার ২৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন সময় চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সময় কমিয়ে প্রধানমন্ত্রী আড়াই থেকে ৩ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান। প্রকল্পের আওতায় ১০৫৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং ৬২ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নবায়ন করা হবে। সভায় থ্রিজি প্রযুক্তি চালুকরণ ও ২ দশমিক ৫ জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ফেজ-২) শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৫৬২টি বিটিএস টাওয়ার স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড (টিবিএল) প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬০৭ কোটি ৭৯ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৬৮ কোটি ২ লাখ টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নর্থবেঙ্গল চিনিকলে উত্পাদন বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য ৩২৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘নর্থবেঙ্গল চিনিকলে কো-জেনারেশন পদ্ধতিতে বিদ্যুত উত্পাদন ও সুগার রিফাইনারী স্থাপন প্রকল্প’ (১ম সংশোধিত) অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় বায়োগ্যাস ও বায়োকম্পোস্ট উত্পাদনের মাধ্যমে অলাভজনক এই চিনিকল লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে ১১৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত) এবং ৬০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে টেকনাফ-রামু-গ্যারিসন-মরিচ্যা-পালং সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। দেশের হাওর-অঞ্চলের জলাধারের স্বাভাবিক প্রবাহ রক্ষা করে হাওরবাসীর উন্নত সড়ক-যোগাযোগ নিশ্চিত করতে এলিভেটেড রোড নির্মাণে পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদেরকে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।

প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই: বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ ও আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। এখানে কোনো কম হবে না। তিনি আরো বলেন, আমেরিকার সাথে তুলনা করলে হবে না। আমেরিকার প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী, আমাদের প্রবৃদ্ধি উচ্চমুখী। ৫ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এটা পৃথিবীর কোথাও হয়নি।

পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী: গতকাল এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে যে, প্রতি উপজেলায় পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা খোলার কার্যক্রমের প্রথম ধাপ হিসেবে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের ১০০টি শাখা আজ দুপুর ১২টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি কয়েকটি শাখার কর্মকর্তা ও সদস্যদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলবেন।