বিদেশ থাকা ঝিনাইদহের পরিবারগুলোকে টার্গেট করে হানা দেয়া হচ্ছে

 

ঝিনাইদহের পল্লীতে বিদেশ থাকা পরিবারে একের পর এক ডাকাতি প্রতিকার নেই!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ‘তোর চার ছেলে বিদেশ থাকে। দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। নইলে বাড়ির মেয়েদেরকে নিয়ে যাবো’। ডাকাতদলের এই কথায় গৃহস্থ জলিল মুন্সি ভয়ে ঘরে থাকা ৮০ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পশ্চিম ঝিনাইদহ (মাধবপুর) গ্রামে অস্ত্রধারী ডাকাতদল হানা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ভোরে এভাবে ডাকাতি করেছে। এর কিছুদিন আগে একই এলাকার চণ্ডিপুর ও লক্ষ্মীপুর গ্রামে ডাকাতি হয়। সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নে চিহ্নিত একটি অস্ত্রধারী গ্রুপ এভাবে একের পর এক ডাকাতি করে যাচ্ছে, কিন্তু মানুষ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। পুলিশ আসে, অভিযোগ লিখে নিয়ে যায়। কিন্তু ডাকাতদলের সদস্যরা থেকে যায় অধরা। পশ্চিম ঝিনাইদহ (মাধবপুর) গ্রামের জলিল মুন্সি জানান, ঘটনার সময় তিনি স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে নিয়ে ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোরের দিকে ১৫-২০ জনের একদল অস্ত্রধারী ডাকাতদল তার বাড়িতে প্রবেশ করে পানি পান করতে চায়। কাছে থাকা জাগ ও গ্লাস এগিয়ে দিতেই মাথার ওপর অস্ত্র ধরে দুর্বৃত্তরা। তারা বলেতে থাকে ‘তোর চার ছেলে বিদেশ থাকে। দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। নইলে বাড়ির মেয়েদেরকে নিয়ে যাবো’। ডাকাতদলের এ কথা শুনে তিনি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পুত্রবধূ কুলছুমকে ঘর খুলতে বলেন। ডাকাতরা ঘরের মধ্যে ঢুকে বাক্স খুলে নগদ ৮০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইলফোন ও টর্চলাইট নিয়ে চলে যায়। সকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই বাজারের পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ দিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ফল নেই বলে জানান, জলিল মুন্সি। তিনি অভিযোগ করেন, এলাকায় প্রতি রাতেই গরু চুরি হচ্ছে, চাঁদা ধরছে, ছিনতাই হচ্ছে। এতে গ্রামের মানুষ ভীত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে বেতাই বাজারের পুলিশ ক্যাম্পের আইসি তারিকুল ইসলাম তারেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার একই এলাকার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কবীর, আবদুল ও সবুজের বাড়িতে হানা দেয়। তারা পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে সোনা, নগদ টাকাসহ ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সকালে খবর পেয়ে সুমাইয়া ও সুন্দরী বেগম নামের দুই নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে নির্যাতন করা হলেও ভয়ে মুখ খুলছে না।

ঘটনার পর পুলিশ চণ্ডিপুর গ্রামের মহাব্বত আলীর ছেলে আমির হোসেনকে আটক করে। কিন্তু তাকে ঝিনাইদহ সদর থানায় সোপর্দ করার নাম করে রাস্তার মধ্যে এনে সমঝোতা করে পুলিশ মালপানি খেয়ে ছেড়ে দেয় বলে এলাকায় কথিত আছে। তবে পুলিশ ছেড়ে দেয়ার কথা অস্বীকার করেছে। এলাকাবাসী সাংবাদিকের নিকট অভিযোগ করে বলেছেন, সাবেক চরমপন্থিদলের সদস্যদের নিয়ে গোটা গান্না ইউনিয়নে একটি আস্ত্রধারী গ্রুপ গড়ে উঠেছে। বেতাই ক্যাম্প পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে গেলেও মানুষ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।