বিডিআর বিদ্রোহে হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের রায় আজ

স্টাফ রিপোর্টার: বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর আজ রোববার রায় ঘোষণা করবে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন। আজ হাইকোর্টের দৈনন্দিন কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডেথ রেফারেন্স নম্বর ৫৮/২০১৩ (রাষ্ট্র বনাম আরডিও তৌহিদুল আলম ও অন্যান্য) মামলাটি রায় প্রদানের জন্য রাখা হলো। সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারকরা এজলাসে বসবেন রায় ঘোষণার জন্য। রায় ঘোষণার পরই জানা যাবে আসামিদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেয়া দণ্ড কতটা বহাল রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মামলার অন্যতম কৌঁসুলি রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল বলেন, আজ রোববার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে। রায়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। তারা যেন কোনোভাবেই খালাস না পায়, শাস্তি যেন কম না হয় উচ্চ আদালতের কাছে আমাদের এটাই প্রার্থনা। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে বিডিআরের তত্কালীন উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) তৌহিদুল আলমসহ ১৫২ জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। ওই রায় ছিলো ফৌজদারি মামলার বিচারের রায়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় ২৫৬ জনকে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৭ জন। ১৫২ জনকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের ওই রায় নিশ্চিতকরণে মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। পাশাপাশি নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জওয়ানের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এদিকে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে তত্কালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় জওয়ানরা অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে। হত্যার পর সেনা কর্মকর্তাদের অনেকের লাশ ম্যানহোলে ফেলে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে লাশ উদ্ধারের দৃশ্য দেখে সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। যাদের মধ্যে কেউ হারিয়েছেন পিতা, কেউ স্বামী বা সন্তান। স্বজনদের একটাই দাবি ছিলো যেন নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেয়া হয়। এই হত্যার ঘটনায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে মামলা দুটি স্থানান্তর হয় নিউমার্কেট থানায়। হত্যা মামলার বিচার নিম্ন আদালতে শেষ হলেও বিস্ফোরক আইনের মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে।