বিজিপির গুলিতে আহত বিজিবি সদস্য : একজনকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী

স্টাফ রিপোর্টার: মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে। এতে বিপ্লব কুমার (২১) নামে বিজিবির এক সিপাহী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার মাথা ও ডান হাতে গুলি লেগেছে। এ সময় বিজিবির আরেক সদস্যকে ধরে নিয়ে গেছে বিজিপি। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টেকনাফ উপজেলার নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়ার নাফ নদীতে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নাফ নদীর বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাকারবারীদের নৌকায় বিজিবি তল্লাশি চালানোর সময় অতর্কিত বিজিপির সদস্যরা গুলি চালায়। এতে বিপ্লব গুলিবিদ্ধ হন। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবর্ষণের সময় বিজিবির নায়েক আব্দুর রাজ্জাক নৌকা থেকে পড়ে যায়। বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে বিজিপি তাকে আটক করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় বিজিবির সৈনিকরা টেকনাফের দমদমিয়া বিওপিতে দায়িত্বরত ছিলেন।

মিয়ানমারের বিজিপির সাথে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে ঘটনাটি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, এ নিয়ে পতাকা বৈঠক হবে। বৈঠকে এর কারণ খুঁজে বের করা হবে। ফিরিয়ে আনা হবে বিজিবির নায়েককে। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ বলেন, ভোরে বাংলাদেশের জলসীমায় মাঝিমাল্লা নিয়ে দুটি নৌকা নাফ নদীতে মাছ শিকার করছিলো। নাফ নদীতে টহলরত বিজিবির সদস্যরা নৌকাগুলোতে ইয়াবা পাচাররোধে তল্লাশি চালান। এ সময় পূর্বদিক থেকে আরেকটি ট্রলারে করে বিজিপি সদস্যরা এসে বিজিবির নৌকায় গুলি ছুঁড়লে সিপাহী বিপ্লব কুমার গুলিবিদ্ধ হন। বিজিপি গুলি করার পর বিজিবি সদস্যরাও গুলি ছুঁড়ে জবাব দেয়। এতে পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি হয়। এ সময় নায়েক রাজ্জাক পানিতে পড়ে গেলে বিজিপির সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। তার বাড়ি নাটোর এলাকায় বলে জানা গেছে। ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, গুলিবিদ্ধ বিপ্লবকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাকে উন্নত চিকিত্সার জন্য কক্সবাজারে পাঠান। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিত্সা দিয়ে পরে তাকে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক আরো জানান, নায়েক রাজ্জাককে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে বিজিপির একটি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। নায়েক রাজ্জাক ভালো আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনতে বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমারে যোগাযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পর বিজিপির কাছে খবর দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু মিয়ানমারের বিজিপি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আজ এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক করবে।