বিএমএ’র ৪ দফা কর্মসূচি : ২৩ মে সারাদেশে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের ঘোষণা

ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর ও একুশে পদকপ্রাপ্ত খ্যাতিমান চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহসহ ৯ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চিকিৎসকরা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বিএমএর সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী। এসময় বক্তব্য রাখেন, বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল লতিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ওয়ালিউর রহমান নয়ন ও জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি) আবুল হোসেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় বিএমএর ঘোষিত ৪ দফা কর্মসূচি পালনে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন কালো ব্যাজ ধারণ, ২১ মে ও ২৫ মে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত মানববন্ধন (এই সময় শুধুমাত্র জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম চালু থাকবে), ২৩ মে সারাদিন সারাদেশে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ থাকবে এবং ২৮ মে কেন্দ্রীয় বিএমএ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

মানববন্ধনে বিএমএ’র সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী বলেন, কেউ মারা গেলে হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের ওপর হামলা করতে হবে এটা ঠিক না। চিকিৎসককে যদি আপনি নিরাপত্তা না দেন তাহলে সুচিকিৎসা হবে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ জনগণ। যদি মনে করেন অবহেলায় কেউ মারা গেছে তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বোর্ড গঠন করে ব্যবস্থা নেবে। হুট করে এসে নার্স, ব্রাদার ও সাধারণ কর্মীদের ওপর হামলা মেনে নেবো না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। চিকিসৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহর জন্য আমরা গর্ববোধ করি।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর, সম্মানিত চিকিৎসকবৃন্দকে লাঞ্ছিত করা ও মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন চুয়াডাঙ্গা শাখার সার্বিক তত্ত্বাবধানে দামুড়হুদায় কালোব্যাজ ধারণ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল শুভর নেতৃত্বে চিৎলা হাসপাতাল সড়কে ওই মানবন্ধন রচিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মকবুল হোসেন, মেডিকেল অফিসার ডা. হোসনে আরা নার্গিস, ডা. লাইলা শামীমা ফারমীন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আবু বকর সিদ্দিক, মেডিকেল অফিসার আয়ুর্বেদীক) ডা. সোহরাব হোসেন, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার রোকনুজ্জামান, এলিচ আক্তার লীনা, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট টিএলসিএ ইনচার্জ হা-মীম হাসান জোয়ার্দ্দার, টেলি মেডিসিন সেন্টারের সহযোগী প্রকৌশলী তৌহিদুজ্জামান তুহিন, ফার্মাসিস্ট মশিউজ্জামান বাবু, সিনিয়র স্টাফ নার্স লাইলী খাতুন, হেনা, নাজমা খাতুন প্রমুখ। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামি ২৩ মে সারাদেশে দিনব্যাপী প্রাইভেট প্রকটিস বন্ধ রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল শুভ। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট টিএলসিএ ইনচার্জ হা-মীম হাসান জোয়ার্দ্দার।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিএমএ মেহেরপুরে জেলা শাখা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. রমেশচন্দ্র নাথ। এসময় জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু তাহের সিদ্দিকি, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান, ডা. ওবাইদুল ইসলাম পলাশ, ডা. এহসানুল কবির, ডা. মিনাল কান্তি মণ্ডলসহ মেহেরপুর বিএমএ’র সদস্যরা মানববন্ধনে অংশ নেন। বক্তারা ওই সময় হাসপাতাল ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আনিত অন্যায় মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে হামলার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে সদর হাসপাতাল চত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জেলা শাখা। ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে বিএমএ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. দুলাল চক্রবর্তী, সিভিল সার্জন ডা. রাশেদা, বিএমএর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. রাশেদ আল মামুন, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ূব হোসেন, আরএমও ডা. অপুর্ব কুমার সাহা, ডা. মোকাররম হোসেন, ডা. জাহিদুর রহমান, ডা. মনসুর আলী, ডা. রাশেদ আলী মোড়ল, ডা. মনছুর আলী, ডা. জিএম মনির, ডা. আনারুল ইসলামসহ জেলার চিকিৎসকরা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা, সারাদেশের চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে হামলার প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে রাজধানীর গ্রীণ রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা প্রত্যহারের দাবি জানান। অবিলম্বে এ দাবি মানা না হলে আগামীতে কর্মবিরতীসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন চিকিৎসকরা।