বিএনপি নেত্রী কাউকে রক্ষা করতে পারবেন না

স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ায় আয়োজিত জনসভায় আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। নিরাপদে থাকতে পারবেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী নেত্রী যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিনি তাদের বাঁচাতে পারবেন না। বাংলার মাটিতে তাদের বিচার হবে, বিচারের রায়ও কার্যকর হবে।

গতকাল বিকেল চারটার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি বলেন, বিএনপি আসে অশান্তি নিয়ে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের দেশ হয় বাংলাদেশ। তারা দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী আর কিছু না পারলেও মিথ্যা কথায় তিনি পারদর্শী। উনি বলেন শাপলা চত্বরে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে, লাখ লাখ বুলেট খরচ হয়েছে। যখন বললাম হিসাব দেন পারলেন না। শেখ হাসিনা বলেন, জামায়াতে ইসলামের মহিলারা আমার মা-বোনদের কাছে গিয়ে মিথ্যা অপবাদ ছড়ায়। আজান হবে না, জানাজা হবে না। অথচ আমরা ক্ষমতায় আছি। মসজিদে আজান হচ্ছে, তারাবির নামাজ হচ্ছে, মানুষ মারা গেলে জানাজাও হচ্ছে। বরং বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় বগুড়ায় মসজিদের ভেতরে কোরআন শরিফ পড়া অবস্থায় মুসল্লিকে খুন করা হয়েছে। তাই এদের মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাদের রক্ষা করতে পারেননি। ওই খুনি হুদা, কর্নেল ফারুকের বিচার বাংলার মাটিতে করে রায় কার্যকর করা হয়েছে। যারা এখনও দেশের বাইরে পালিয়ে আছে তাদের খুঁজে বের করে সাজা কার্যকর করা হবে। তেমনিভাবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর যতোই চেষ্টা করুক না কেন, ওই আলবদর, খুনি জামায়াতকে রক্ষা করতে পারবে না। যাদের সাজা হয়েছে ইনশাআল্লাহ বাংলার মাটিতে রায়ও কার্যকর হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধে যাদের বিচার হয়েছে তাদের রায় বাংলার মাটিতে কার্যকর করা হবেই।

শেখ হাসিনা প্রায় ২৫ মিনিটের সংক্ষিপ্ত ভাষণে বিরোধীদলের নেতার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আপনি সরকারের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিলেন ছেলেদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য। কিন্তু তাদের লেখাপড়া না শিখিয়ে মানি লন্ডারিং আর টাকা চুরি শিখিয়েছেন। জনসভায় ভাষণ দেয়ার আগে তিনি বাস্তবায়িত ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৩টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ এর আগস্টে পরিবারের সকলকে হারিয়েছি। আজ আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি সব ব্যথা-বেদনা ভুলে মানুষের জন্য রাজনীতি করি। স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি আগামী নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য জনসভায় উপস্থিত বিপুল জনতাকে আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে ১৭ মিনিট বক্তব্য রাখেন। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার জুলফিকার আরজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাক্তার দিপু মনি, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল আলম হানিফ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জাতীয় পরিষদ সদস্য সদর উদ্দিন খান প্রমুখ।