বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের চোখ লন্ডনে

 

স্টাফ রিপোর্টার: চলমান লন্ডন সফরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন- এমন আলোচনায় এখন রাজনৈতিক মহল সরব। আর এ খবরে দলের মানোয়নপ্রত্যাশীরা লন্ডনে কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করেছেন। বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি পেশাজীবীদের কেউ কেউও চেষ্টা করছেন সরাসরি লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। কেউ কেউ তার ঘনিষ্ঠ নেতাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন। অনেকে মালয়েশিয়া গিয়ে সেখানে অবস্থানরত তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ নেতাদের মাধ্যমে টেলিফোনে যোগাযোগ করে নিজের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে বিএনপির ৯০০ প্রার্থী আছে বলে এরই মধ্যে দল থেকে জানানো হয়েছে। প্রার্থীদের একটি তালিকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন নিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই তালিকা নিয়ে বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে নেতাকর্মীরা জানতে পেরেছেন।

বিএনপি সূত্রমতে, চিকিৎসার উদ্দেশে খালেদা জিয়া লন্ডন গেলেও সেখানে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত নেবেন। বিশেষ করে তারেক রহমানের পরামর্শে নির্বাচনে বেশ কিছু নেতাকে মনোনয়ন দেয়া না-দেয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তাই দলীয়প্রধানের লন্ডন সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। তারা মনে করেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে কে মনোনয়ন পাবেন আর কে পাবেন না, তা এ সফরেই চূড়ান্ত হবে। এজন্য বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দেশে খুবই তৎপর হয়ে উঠেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ নেতাদের কদর অনেক বেড়ে গেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পিএস মিয়া নূরুদ্দিন অপু, গুলশান কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা, বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য, এক সহসম্পাদক, নির্বাহী কমিটির এক তরুণ নেতা এবং তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ লন্ডন বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে বিএনপির ব্যানারে নির্বাচন করতে আগ্রহীরা যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপির এক সিনিয়র নেতা এবং মালয়েশিয়ায় থাকা মধ্য সারির এক নেতার সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীরা যোগাযোগ করছেন। এসব নেতার কাছে নিজের যোগ্যতার বিষয়টি উপস্থাপন করে চূড়ান্ত তালিকায় নাম রাখতে দলের শীর্ষ দুই নেতাকে সুপারিশ করার অনুরোধ করছেন।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, লন্ডন সফরে দলের শীর্ষ দুই নেতা নির্বাচনের প্রার্থী কাদের করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এখনই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আগামীতে আরও অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে নির্বাচনের মাঠে নামতে হবে। সেসব পরিস্থিতি মোকাবেলায় যারা যোগ্যতার প্রমাণ দেবে তাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। এর মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সহায়ক সরকারের দাবিতে বড় ধরনের আন্দোলনে যারা যোগ্যতার প্রমাণ রাখবেন তারা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন। শুধু শীর্ষ নেতার আশীর্বাদে এবার মনোনয়ন নিশ্চিত হবে না। এরপরেও অনেকে মনোনয়ন দৌড়ে নিজেকে এগিয়ে রাখতে শীর্ষ নেতার কাছে তদবির চালোনোর চেষ্টা করছেন। তবে এবার শুধু তদবিরে লাভ হবে না।

এ ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চেয়ারপারসনের লন্ডন সফরে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে এমন কোনো তথ্য তার কাছে নেই। তবে দুই নেতার আলোচনায় বিষয়টি এলেও আসতে পারে। প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পরিবারের সঙ্গে আসন্ন ঈদুল আজহা উদযাপন করে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।