বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে একজন নিহত : আহত ৩

???????????????????????????????

 

আলমডাঙ্গার কুয়াতলা গরুভর্তি টলিকে সাইড দিতে গিয়ে বাস উল্টে বিপত্তি

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার কুয়াতলা নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ১ জন নিহত ও ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আলমডাঙ্গা থেকে হাটবোয়ালিয়াগামী নিউ ফোর স্টার নামের একটি যাত্রিবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল সোমবার এ দুর্ঘটনার সময় বাসের ঘাতক ড্রাইভার ও সুপারভাইজার পালিয়ে যান। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সে সময় আলমডাঙ্গাগামী আল্লারদান নামের যাত্রিবাহী একটি বাস ভাঙচুর করেছে।

জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে আলমডাঙ্গা থেকে হাটবোয়ালিয়ার উদ্দেশে নিউ ফোর স্টার নামের একট যাত্রিবাহী বাস (গাজীপুর- জ-০৪-০২৭৮) ছেড়ে যায়। পথিমধ্যে বেলা সোয়া ৫টার দিকে কুয়াতলা নামক স্থানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এ সময় কুয়াতলা গ্রামের মৃত রহিম মণ্ডলের ছেলে মুনসুর আলী (৪৫) বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার সাথে থাকা অপর দুজন ও ১ বাস যাত্রী গুরুতর আহতসহ অনেকেই কম-বেশি আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতরা হলেন কুয়াতলা গ্রামের সুন্নত আলীর ছেলে শাহীন (৪০), আফসার আলীর ছেলে বিল্লাল গণি (৬০) ও বাসের যাত্রী কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার রাজনগর গ্রামের সায়েদ আলীর ছেলে লালন (৪০)। গুরুতর আহতদের মধ্যে শাহীন ও বৃদ্ধ বিল্লালকে হারদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহত লালনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার পর বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার পালিয়ে যায়। বাসের ড্রাইভারের পরিচয় দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে- চুয়াডাঙ্গা শহরের দৌলতদিয়াড়ের পটোল ওরফে ফন্টে নামের এক ব্যক্তি ওই ঘাতক বাসের ড্রাইভার ছিলেন। সুপারভাইজার ছিলেন আলমডাঙ্গার রিপন।

অন্যদিকে, এ ঘটনার পর পরই আলমডাঙ্গার উদ্দেশে হাটবোয়ালিয়া থেকে ছেড়ে আসা আল্লারদান ( সিলেট- জ- ১১- ০৪৮৩) নামের একটি যাত্রিবাহী বাস বেলা সোয়া ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বাসটি ভাঙচুর করে। অবস্থা বেগতিক দেখে এ বাসটির ড্রাইভার ও সুপারভাইজার পালিয়ে যায়।

স্রেফ অনাহুত ছিল এ দুর্ঘটনা: প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্রেফ অনাহুত এ দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলের রাস্তার অপর পাশের অসুস্থ্য সোহরব হোসেনকে দেখতে গিয়েছিলেন বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত মুনসুর আলী, একই গ্রামের সুন্নত আলীর ছেলে শাহীন, আফসার মালিথার ছেলে বিল্লাল হোসেন ও সোহরাব আলী। অসুস্থ্য সোহরব হোসেনকে দেখে বাড়ি ফেরার পথে পা বাড়াই তারা। সবেমাত্র সোহরবের বাড়ির সামনের খোলায় উপস্থিত হলে ঘাতক বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে উল্টে তাদের ওপর গিয়ে পড়ে। সকলের সামনে ছিলেন মুনসুর আলী। তিনি বাসের সামনের চাকায় পিষ্ট হন। অন্যরা গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। এছাড়া বাসযাত্রীদের অনেকেই কম-বেশি আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনার কারণ: এ দুর্ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলমডাঙ্গা থেকে ছেড়ে যাওয়া এ ঘাতক বাসটি হাটবোয়ালিয়ায় যাচ্ছিলো। অপরদিকে হাটবোয়ালিয়ার দিক থেকে একটি গরুভর্তি লাটাহাম্বার আলমডাঙ্গার দিকে ছুটে আসছিলো। দ্রুতগতিতে ছুটে চলা বাস গরুভর্তি টলিকে সাইড দিতে রোডের একবারে পাশে সরে যায়। একই সাথে সজোরে ব্রেক ধরার কারণে বাসটি উল্টে রাস্তার পাশে পড়ে এ প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে মন্তব্য করেন।

নিহতের পরিচয়: হারদী ইউনিয়নের কুয়াতলা গ্রামের মৃত রহিম মণ্ডলের ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে ২য় নিহত মুনসুর আলী। তার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। ২ মেয়েই বিবাহিত। ছেলে প্রতিবন্ধী।

সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের এসআই আবুল খায়ের ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে নেন। আজ মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করা হবে। হারদী ইউপি চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী নূরুল ইসলামও ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। এ সংবাদ পর্যন্ত নিহতে বড় ভাই আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।