বার বার যদি মন্ত্রী আসতেন………….

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও এর আঙিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত প্রায় ৫০ জন শ্রমিক। হাসপাতাল প্রাঙ্গণের ময়লার ভাগাড় সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন অযন্ত্র-অবহেলায় জঙ্গলে পরিণত হওয়া ওষধি বাগানটিও আজ পরিস্কার। হাসপাতালের একতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত কোথাও নোংড়ার দেখা নেই। সবখানেই পরিস্কার। ভোর থেকেই হাসপাতালের পরিচ্ছন্নকর্মী ছাড়াও বাইরের আরও কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মী অবিরাম পরিস্কার করছেন। টয়লেটে ছিটানো হচ্ছে হারপিক। এ যেন এক অন্যরকম হাসপাতাল। এর নেপথ্যে আজ বুধবার হাসপাতালের নতুন ভবন উদ্বোধন করতে আসার কর্মসূচি ছিলো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। তাইতো হাসপাতালের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সুইপার পর্যন্ত কারও যেনো দম ফেলার সময় নেই। এসব কর্মযজ্ঞ দেখে উৎসুক মানুষের অনেকেই আফসোস করে বললেন, মন্ত্রী যদি বারবার আসতেন তাহলে হাসপাতাল অন্তত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতো। অবশ্য মন্ত্রীর নির্ধারিত সফর কর্মসূচি বাতিল হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
১৯৬৩ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তথা গাংনী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০০৬ সালে হাসপাতাল ভবন সম্প্রসারণ (১৯ শয্যার ভবন) ও ডক্টরস কোয়ার্টার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঢাকার মেসার্স ওয়াহেদ ট্রেডার্স কার্যাদেশ পায়। ২০১০ সালে ঠিকাদারের লোকজন নির্মাণ কাজ ফেলে ৪৩ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছে মর্মে বিল উত্তোলন করে গা ঢাকা দেয়। নানা জটিলতা কাটিয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পুনঃদরপত্র আহ্বান করলে ২০১৪ সালে আবারও কাজ শুরু হয়। কুষ্টিয়ার ঠিকাদার কামাল হোসেন ৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করেন। আধুনিক ৪তলা এই ভবনে রয়েছে চারটি ওয়ার্ড। এগুলো হচ্ছে- পুরুষ-মহিলা, মা ও শিশু এবং আই সল্যুউশন ওয়ার্ড। নীচতলায় জরুরি বিভাগ, টিকিট কাউন্টার ও আউটডোরে ডাক্তার চেম্বারে রোগী দেখার ব্যবস্থা। দোতলায় অফিস ও প্যাথলজি বিভাগ। অপারেশন থিয়েটার, মহিলা ও লেবার এবং আই সল্যুউশন ওয়ার্ড থাকছে তিন তলায়। চতুর্থ তলায় থাকছে মহিলা ও শিশু এবং পুরুষ ওয়ার্ড।
এদিকে, নতুন নির্মাণ করা ভবনের মধ্যে ডাক্তারদের ডরমেটরিতে ৪টি ফ্লাট, মূল ভবনের পেছনে দোতলা নার্স কোয়ার্টার এবং তিনতলা বিশিষ্ট তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের আবাসিক ভবন। হাসপাতালের পুরাতন ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই অবশ্য ব্যবহার শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, স্বাস্থ ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বুধবার দুপুরে নবনির্মিত ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে কর্মসূচি দেয়া হয়। এ উপলক্ষে কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরই মাঝে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মন্ত্রী কর্মসূচি বাতিল করেছেন।
বছরের অন্য সময় অর্থ বরাদ্দের অভাবে হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা হয় না। মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে কিভাবে এটি সম্ভব হচ্ছে প্রশ্ন করলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা কিছু অর্থ ব্যয় করছি। বাকিটা মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন বহন করছেন।