বানিয়াপুকুরের কিশোর সজিবকে পিটিয়ে আহত করেছে কাষ্টদহের কয়েকজন

 

অপ্রাপ্তবয়স্কর বিরদ্ধে প্রাবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকয়ার অভিযোগে নির্যাতন : উত্তেজনা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বানিয়াপুকুর গ্রামের সজিব হোসেন (১৩) নামের একজকে বেধড়ক পিটিয়েছে পার্শ্ববর্তী কাষ্টদহ গ্রামের কিছু ব্যক্তি। প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে কাষ্টদহ গ্রামে দেখা করতে গেলে গত শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গুরুতর আহত সজিবকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে এতোটাই আঘাত করা হয়েছে যে সুস্থ হতে অন্তত এক মাস সময় লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসক।

একজনা অপ্রাপ্ত বয়স্ককে কয়েক ব্যক্তি মিলে পেটানোর ঘটনায় গোটা বানিয়াপুকুর গ্রামজুড়ে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। যেকোনো সময় কাষ্টদহ গ্রামবাসীর ওপর তারা প্রতিশোধ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। ঘটনার সাথে জড়িত কাষ্টদহ গ্রামের মজনু মিয়াসহ তার সঙ্গীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বানিয়াপুকুর গ্রামবাসী।

আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বানিয়াপুকুর গ্রামের কৃষক আসাদুল ইসলামের ছেলে সজিব হোসেন লেখাপড়া বাদ দিয়ে বাড়ির কাজকর্ম দেখাশোনা করে। সম্প্রতি কাষ্টদহ গ্রামের শিখা খাতুন নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে মোবাইলে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে দুজনে প্রেমসম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। দাম্পত্যে কলহ ও স্বামী বিদেশ থাকায় সজিবকে একান্তে কাছে পাওয়ার আকুতি জানায় শিখা খাতুন। প্রায়ই তাকে দেখা করতে বলে। শুক্রবার রাতে শিখার আবেদনে সাড়া দিয়ে সজিব তার দুই বন্ধুকে সাথে নিয়ে কাষ্টদহ গ্রামে যায়। রাত এগারোটার দিকে শিখা তার পিতার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে নিচে অবস্থান করা সজিবের সাথে প্রেমালাপ করছিলো। এ সময় প্রতিবেশীরা টের পেয়ে সজিবদেরকে ধাওয়া করে। দুই বন্ধু পালিয়ে গ্রামে পৌঁছুলেও ধরা পড়ে সজিব।

ধরা পড়ার পর কাষ্টদহ গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে মজনুর নেতৃত্বে মৃত আকছেদ আলীর ছেলে মন্টু মিয়া, কাওছার আলীর নবী, তানজুমানের ছেলে কামরুল ও রুস্তম আলীর ছেলে ছানোয়ারসহ কয়েকজন সজিবকে মাটিয়ে ফেলে লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। হাতজোড় করে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করেও নিস্তার পায়নি সজিব। তাকে এতোটাই মারধর করা হয় যে লাঠিসোঁটাতে রক্তের ছাপ লেগে যায়। তারপরও তাকে ছেড়ে দেয়নি মজুন।

এদিকে খবর পেয়ে বানিয়াপুকুর গ্রামবাসীর অনুরোধে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল সজিবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থল থেকে সজিবকে পেটানো রক্তামাথা লাঠিসোঁটা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে।

এদিকে এ ঘটনায় বানিয়াপুকুর গ্রামে গতরাতে সালিসসভায় অভিযুক্ত মজনু ও তার সঙ্গীদের সাজা দাবি করা হয়। যেকোনো সময় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয় গ্রামবাসী। গ্রামের কয়েকজন জানান, সারাদেশে যখন শিশু নির্যাতনের বিষয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সোচ্চার সেখানে মজনু মিয়া ও তার লোকজন কীভাবে এই নির্মম নির্যাতন করতে পারে। শিশু নির্যাতনকারীদের সাজা দেয়া না হলে নির্যাতন বন্ধ হবে না। শিখার আবেদনে সাড়া দিয়ে সজিব সেখানে গেলেও পেটানো হয়েছে সজিবকে। তাহলে শিখা কি নির্দোষ? সাজা দিতে হলে তো শিখাকেও দিতে হবে।