বানভাসি এলাকায় মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই

 

স্টাফ রিপোর্টার: বানভাসি এলাকায় মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে বন্যার পানি। সেই সাথে যোগ হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টিপাত। উজান থেকে নেমে আসা পানির সাথে ভারি বৃষ্টিপাত যোগ হয়ে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনিত ঘটাচ্ছে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা উত্তরের বন্যা পরিস্থিতির পাশাপাশি দেশের মধ্যাঞ্চলেও বন্যার আশঙ্কা করছেন। তারা বলেন, উত্তরের পানি মধ্যাঞ্চলে নেমে এলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে। এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে পড়ছে অনেক বসতবাড়ি। আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে অনেক মানুষ।

এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড খবর দিয়েছে, দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তারা জানায়, দেশের ৮টি প্রধান নদী সমতলে ১২টি স্টেশনে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে বাহাদুরাবাদঘাট এলাকায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও সিরাজগঞ্জ ও কাজীপুরে এ নদীর পানি ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

দেশের বন্যা পরিস্থিতির অবনতির সাথে যোগ হয়েছে দেশের অব্যাহত ভারি বৃষ্টিপাত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উজান থেকে নেমে আসা পানির সাথে ভারি বৃষ্টিপাত বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাচ্ছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে এক রাতে ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬০ মিলিমিটার। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে এই পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া তারা জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ১০৩ মিলিমিটার; যা ওইদিন দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। তারা জানায়, ঢাকার পরে দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহে ২৮, সিলেটে ১৯, চট্টগ্রামে ৫, খুলনায় ৬, বরিশালে ৬ ও রংপুরে ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বৃষ্টির এই ধারা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

উত্তরের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের কোন সীমা নেই। বন্যার অবনতির কারণে কুড়িগ্রামে সাড়ে তিনলাখ লোক পানিবন্দী হয়ে পড়ছে। গাইবান্ধরায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে আরও ৯৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষ নিরাপদে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টার করছে। পাশিপাশি ত্রাণের জন্যও ছুটছেন তারা। জানা গেছে বন্যায় সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বনার্ত এলাকায় খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। পানি ওঠায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে।