বাংলাদেশে ফেরত মহিলা চলন্ত মৈত্রী ট্রেনে বিএসএফ কর্তৃক শ্লীলতাহানির শিকার

স্টাফ রিপোর্টার: কোলকাতা থেকে ঢাকাগামী বাংলাদেশি মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে এবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এক মহিলা যাত্রীর শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকালে মহিলা যাত্রীর শ্লীলতাহানির সংবাদ দর্শনা স্টেশনে পৌঁছে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যান। বিষয়টি তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার বারনী গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আবুল হাসনাত ভুঁইয়া (পাসপোর্ট নং এএফ-২৩২২৩৭৪) স্ত্রী কামরুস সাময়াত উরমী (২৫) (পাসপোর্ট নং-বিএইচ-০৫৪৪৮৪) ও তাদের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ভারতে যান। গতকাল ফেরার পথে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাংলাদেশের কোচবাহী ঢাকাগামী ৩১০৮ নং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী হয়ে কোলকাতার চিৎপুর স্টেশন থেকে রওয়ানা দেন। ট্রেন ছাড়ার আনুমানিক ২০ মিনিট পর স্ত্রী উরমী ট্রেনের টয়লেটে যান। এ সময় ভুলবশত টয়লেটের দরজার সিটকিনি না লাগানোর সুযোগ নিয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জনৈক বিএসএফ সদস্য উরমীর টয়লেটে প্রবেশ করে বন্দুকের নল উচিয়ে চিৎকার করতে বাধা দেয় এবং শ্লীলতাহানি করে। নিরুপায় উরমী এরপরও আর্তচিৎকার করলে সাধারণ যাত্রীরা এগিয়ে আসায় বড় ধরনের বিপদ থেকে সে রক্ষা পেলেও সে ধস্তাধস্তিতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত পেয়ে আহত হন। চলন্ত ট্রেনের ঘটনাটি স্বামী আবুল হাসনাত ভারত সীমান্তের গেদে স্টেশনে যাত্রা বিরতিকালে স্থানীয় বিএসএফ সদস্যদের অবহিত করলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের সংবাদ পাওয়া যায়নি। পরে মৈত্রী ট্রেনটি গতকাল সকাল পৌনে ১১টায় দর্শনা আর্ন্তজাতিক রেল স্টেশনে পৌঁছুলে যাত্রীদের মাধ্যমে প্রথমে জানাজানি হয়। পরে স্বামী হাসনাত ইমিগ্রেশন ওসির নিকট বিষয়টি রিপোর্ট করেন। এ বিষয়ে এই প্রতিবেদক দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মীর লিয়াকত আলীর নিকট জানতে গেলে তিনি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন।
তবে ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর বাহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্পর্শকাতর হওয়ায় ঘটনাটি তাৎক্ষণিক মৌখিক ও পরে লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিভিন্নস্থানে চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত সরকার সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে মৈত্রী ট্রেনের যাত্রীদের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিবর্তে গত ডিসেম্বর থেকে বিএসএফ নিয়োগ দেয়, আর সেই বিএসএফ কতৃকই বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী নিগৃহিত হবার ঘটনা ঘটলো।