বলে কয়ে এসেও পরিদর্শক পেলেন বহু অনিয়ম : ফিরতেই তথৈব

চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ের কম্পিউটার বেস ইন্টারলকিং সিস্টেম পরিদর্শন করলেন রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান
স্টাফ রিপোর্টার: ক’দিন ধরেই চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের ধোয়া-মোছার কাজ চলছিলো। দোকানগুলোর পাশে স্তূপ করে রাখা মালামালসহ ফ্রিজ বস্তা পাটিও সরিয়ে নেয়া হয়। স্টেশনের পরিষ্কার পরিপাটি পরিবেশ দেখে নিয়মিত যাত্রীদের মাঝে শুধু স্বস্তিই ফেরে না, প্রশ্নও দানা বাঁধে। কেন এতো পরিষ্কার পরিছন্নতা, কেনই বা দোকানিদের এতো নিয়ম মানার তোড়জোড়? পদস্থ কর্তা পরিদর্শনে আসবেন শুনেই স্টেশন মাস্টারের তদারকিতে চলে এসব তৎপরতা। এরপরও গতকাল যখন বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ে পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দার চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছান, তখনও অনিয়মের অসংখ্য থকথকে ঘা। অভিযোগকারীরাও যেন প্রাণ খুলে তুলে ধরলেন অন্তহীন অভিযোগ। পদস্থ কর্তা সকল অনিয়ম দূর করে যতো দ্রুত সম্ভব নিয়ম প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। অবাক হলেও সত্য, তিনি ফিরতেই স্টেশনের দৃশ্যপট ফিরে যায় পূর্বের অবস্থায়।
চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ের কম্পিউটার বেস ইন্টারলকিং সিস্টেম পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ সরকারের রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দার। তিনি ডিজিটাল সিগনাল বাতি, চুয়াডাঙ্গার প্রধান লেভেল ক্রসিং ও রেল স্টেশনের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন এবং রেলওয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেন। চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের কিছু অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হলে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন আখতারুজ্জামান। অনিয়মগুলোর মধ্যে বর্তমানে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে রাতেরবেলা বিদ্যুত চলে গেলে রেল স্টেশন অন্ধকারে ভূতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। অন্ধকারে দূরদূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আধুনিক একটি আইপিএস ও সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলেও দীর্ঘদিন সেটা অচল অবস্থায় পড়ে আছে স্টেশন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে। আখতারুজ্জামান আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিকল্প বিদ্যুত ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধানের নির্দেশ দেন চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে। স্টেশনের দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগারটি বর্তমানে ল্যাম্পম্যানের বসতবাড়িতে পরিণত হওয়া ও তৃতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগারের নাজুক অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেন রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দার। চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের অনিয়মগুলো খতিয়ে দেখা ও দ্রুত এর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার অসম কুমার তালুকদারকে নির্দেশ দেন। তিনি স্টেশনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও আশপাশের পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি কম্পিউটার বেস ইন্টারলকিং সিস্টেম চালু করার জন্য দ্রুত আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আশ্বাস দেন। বাংলাদেশ সরকারের রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দারের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেল ভবনের সিগন্যাল প্রোজেক্ট ডাইরেক্টর আবুল কালম, রাজশাহী অঞ্চলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রমজান আলী, বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার রাজশাহী অসিম কুমার তালুকদার, এডিশনাল চিফ বেনুরঞ্জন সরকার, ডিভিশনাল অফিসার সাইফুজ্জামান, আবু হেনা, শওকত জামিল মহসিন, খাইরুল আলম, চুয়াডাঙ্গার সহকারী প্রকৌশলী শওকত আলী, ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন, ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (কার্য) চাঁদ আহামেদ, ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) সাইফুল ইসলাম, স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত প্রমুখ।