বর্বর হামলায় রক্তপাত অব্যাহত : নিহতের সংখ্যা ৬শ পার

ইসরাইলের দম্ভোক্তি : দরকার হলে সমগ্র গাজা দখল করা হবে

মাথাভাঙ্গা মনিটর: গাজায় বর্বর হামলা চালিয়ে শ শ মানুষ হত্যার পরেও ইসরাইলের পক্ষ থেকে দম্ভকরে বলা হয়েছে যে, যদি দরকার পড়ে তবে সমগ্র গাজা দখল করা হবে। এদিকে, ইসরাইলের বিমান ও স্থলপথের দ্বিমুখি হামলায় গতকাল মঙ্গলবার আরো ২৫ জন নিহতহয়েছে। এতে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। জাতিসংঘসহ গোটবিশ্ব থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না।

জাতিসংঘেরনিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধবিরতিতে পৌছানোর আহ্বান জানানোর পরেও ইসরাইলেরএমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যে শান্তিপ্রিয় মানুষের মনে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে।ইসরাইলের যোগাযোগ মন্ত্রী গিলাড এরডানবলেছেন, তাদের সেনারা অবশ্যই হামলা চালিয়ে যাবে। শিগগিরই যুদ্ধবিরতির কোনোসম্ভাবনা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা যেসবটানেল ব্যবহার করে ইসরাইলে ঢোকার চেষ্টা করে সেগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ততাদের সেনারা থামবে না। এরডান আরো বলেন, গাজা থেকে অস্ত্রধারীরা চলেযাবে এমন নিশ্চয়তা কীভাবে পাব। তাই তাদের নিরস্ত্র করতে আমাদের সেনাদেরকিছুদিন গাজা ও সীমান্ত এলাকায় থাকতে হবে। সন্ত্রাসীদের নির্মূল করারপ্রয়োজনে আমরা পুরো গাজা দখল করব।

এদিকেগাজায় অস্ত্রবিরতিরজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। আর এ লক্ষ্যে মার্কিনপররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি মিসরের রাজধানী কায়রোতে জাতিসংঘ মহাসচিব বানকি-মুনের সাথে বৈঠক করেছেন। কেরি বলেছেন, ফিলিস্তিনে প্রাণহানির ঘটনায়যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। তবে ইসরাইলের যথার্থ ও বৈধ সামরিক অভিযানেরপ্রতিতার সমর্থনের কথাও জানান। তিনি বলেন, গাজায় অবিলম্বে মানবিক সংকট হরাসেরলক্ষ্যে ৪ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

গাজায় ইসরাইলি হামলার পর গত দু সপ্তাহে সংঘর্ষে প্রায় ৬শফিলিস্তিনি ও ২৯ ইসরাইলি নিহত হয়েছে। ইসরাইল গতকাল বলেছে, তাদের আরো দুসৈন্য নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে গাজায় শুরু হওয়া স্থলঅভিযানের পর গতকাল পর্যন্ত ইসরাইলের ২৭ সেনা নিহত হলো। এছাড়া হামাসের রকেটহামলায় আরো দুই বেসামরিক ইসরাইলি নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি দখলকৃতপশ্চিম তীরে তিন ইসরাইলি কিশোর ও জেরুজালেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকেহত্যার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইসরাইলি তিন কিশোরকে হত্যার জন্য হামাসকেদায়ী করা হয়। তবে হামাস এ অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। এর কয়েকদিন পর পূর্বজেরুজালেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে অপহরণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন ৬ ইহুদীকে আটক করে। এরপর মূলত ইসরাইল ও হামাসপাল্টাপাল্টি হামলা শুরু করে। গাজা থেকে ইসরাইলে জঙ্গিদের রকেট হামলা বন্ধেতেলআবিব কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বিমান হামলা ও নৌঘাঁটি থেকে গোলাবর্ষণের পরবৃহস্পতিবার থেকে স্থল অভিযান শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্বাধীনরাষ্ট্রের দাবিতে ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম শুরু করে। এর পর থেকে নিয়মিত রক্তঝরলেও আজও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।