বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলের সহযোগিতা চাই

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দারিদ্র্যের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। সেজন্য সকলের সহায়তা চাই। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে স্বনির্ভর, স্বচ্ছল, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করা হবে। গতকাল সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪১৮ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণ এবং দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে কৃষি খাতে নিরবচ্ছিন্ন ও নিবিড় গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি গবেষণায় তার সরকারের সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে খাদ্য সঙ্কট এবং বিশ্বব্যাপি খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। অধিক খাদ্য উত্পাদন ও বহুমুখিকরণে কৃষি খাতে নতুন উদ্ভাবন ছাড়া খাদ্য উত্পাদনের চলমান অগ্রগতি ধরে রাখা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে তিনি কৃষি বিজ্ঞানীদের সমর্থন কামনা করে বলেন, কৃষি বিজ্ঞানীরা যেন এ খাতে আরো অবদান রাখতে পারেন এ জন্য আগামীতে তাদের অবসরের বয়স বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনার ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বার্ষিক চাহিদার চেয়েও দেশে ৩০ লাখ মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উত্পাদিত হচ্ছে। তিনি বলেন, গত সাড়ে ৪ বছরে কৃষি খাতে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া এবং প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষিঋণের ৯৮ শতাংশ ফেরত এসেছে। কৃষকরা ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সহজ শর্তে কৃষিঋণ নিয়ে এবং সময়মতো ফেরত দিয়ে কৃষির উন্নয়নে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারছেন। তিনি বলেন, আমরা দক্ষিণাঞ্চলকে শস্য ভাণ্ডার করতে চাই। পার্বত্য অঞ্চলে ফলের চাষ বৃদ্ধি করা হবে। জলাভূমিতে ধাপের ওপর সবজীর বাগান কারার পরিকল্পনাও নিয়েছি।

কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কৃষি সচিব ড. এস এম নাজমুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। কৃষি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য এবার ২৮ ব্যক্তি ও সংস্থাকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক দেয়া হয়। এ পদকের মধ্যে রয়েছে ৪টি স্বর্ণ, ৭টি রৌপ্য ও ১৭টি ব্রোঞ্জ পদক।

স্বর্ণপদক প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি: ইস্ট বীরকোট আইপিএম উইম্যান ক্লাব, সেনবাগ, নোয়াখালী; গাদখালী নার্সারার এন্ড ফ্লাওয়ার ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন-ঝিকরগাছা, যশোর; গাইবান্ধা সাদুল্লাপুরের এম লুত্ফর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের (এইডি) উপ-পরিচালক মামুনুর রশিদ। রৌপ্য পদকপ্রাপ্তদের তালিকা: বায়ো-টেকনোলজি ডিভিশন অব বাংলাদেশ এটোমিক এগ্রি-রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ; রংপুরের বদরগঞ্জের দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের আসাদুজ্জামান চৌধুরী, মৃত্তিকা গবেষণা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, চাঁদপুরের কৃষাণপুরের কুমারডুগি ভেজিটেবল সিআইজি কো-অপারেটিভস লিমিটেড, বাগেরহাটের এইডি মৃত্যুঞ্জয় রায়, হবিগঞ্জের মাধবপুরের আমজাদ খান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জীব সূত্রধর। ব্রোঞ্জ পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান: রংপুরের মিঠাপুকুরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরিমল সরকার, শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মকসুদুর রহমান লেবু, কিশোরগঞ্জের খামারবাড়ীর এইডি স্টোর-কীপার সৈয়দ নূরুল আওয়াল তারামিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালমা আক্তার, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা, রাজবাড়ী সদরের লগি বেগম, নীলফামারীর সৈয়দপুরের মেসার্স ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ, বগুড়ার শিবগঞ্জের এম আনসার আলী, নরসিংদীর শিবপুরের সেলিনা জামান, পাবনার ঈশ্বরদীর আদর্শ কৃষিখামার, খুলনার ডুমুরিয়ার মাটি মা মনীদ্র-সাবিত্রী অ্যাফরেস্টেশন প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপালের ডি জে এগ্রো লিমিটেডের সৈয়দ আবদুল মতিন, পটুয়াখালীর কলাগাছার মাসুম সিকদার, সিলেটের বিশ্বনাথের আলতাফ আলী, ঠাকুরগাঁওয়ের রানিশংকৈলের এম জাহেরুল ইসলাম, পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুণ্ডর আমিরুল ইসলাম এবং ফেনীর দাগনভুঁইয়ার ওমরপুরের মঈন উদ্দিন।