ফোন নিয়ে টানাটানিতেই কি আটকে গেলো দু নেত্রীর প্রত্যাশিত সংলাপ?

স্টাফ রিপোর্টার: টেলিফোনে দু নেত্রীর কথোপোকথন দেশজুড়ে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা নিয়ে টানাটানিতেই কি শেষ পর্যন্ত আটকে গেলো দু নেত্রীর সংলাপ? প্রশ্নটি ইতোমধ্যই আলোচকদের বিদ্ধ করছে।

শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোন করেছিলেন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সংলাপের জন্য গত সোমবার বিরোধীদলীয় নেত্রীকে গণভবনে দাওয়াত দেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ওই দিন ১৮ দল আহুত হরতাল থাকায় আমন্ত্রণ গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি মঙ্গলবারের পর যেকোনো দিন দাওয়াত গ্রহণে প্রস্তুত বলে জানান। গত মঙ্গলবার অতিবাহিত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলাও হয়েছে দাওয়াত এখনও বহাল আছে। কিন্তু এখন দাওয়াতের দিন ক্ষণ নির্ধারণ করতে কে আগে ফোন করবেন সেই নিয়ে টানাটানিতেই অনিশ্চয়তায় রয়ে গেছে দু নেত্রীর সংলাপ। এ টানাটানিতেই কি ব্যর্থ হয়ে যাবে সংলাপের সম্ভাবনা? ষাটের দশকে শ্যামল মিত্রের গাওয়া সেই বহুশ্রুত গানের মতই কি দাঁড়াবে সংলাপে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়টি- ‘যদি ডাক এপার হতে/এ আমি আর ফিরবে না/আমার খেয়া তোমার কূলে/আর কখনো ভিড়বে না।’ বেগম খালেদা জিয়া মঙ্গলবারের পর যে কোন দিন দাওয়াত গ্রহণে প্রস্তুত বলে টেলিফোন সংলাপে জানালেও মঙ্গলবার হরতাল শেষে প্রেসব্রিফিঙে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম কথা বললেন একটু ভিন্ন সুরে। তিনি বললেন, বিরোধীদল সরকারের সাথে আলোচনায় প্রস্তুত। বেগম খালেদা জিয়াও প্রস্তুত আছেন গণভবনে যেতে। তবে এজন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে প্রমাণিত হবে তাদের সদিচ্ছা নেই। বিরোধীদল কেন সরকারকে ফোন করতে যাবে? জবাবে গতকাল বুধবার দলের এক সভা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিরোধী দলীয় নেত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কয়েকদিন পর এখন তারা আবার আমন্ত্রণ চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ স্ট্যান্ডিং। আমরা তার (বিরোধীদলীয় নেত্রী) রিপ্লাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছি। প্রধানমন্ত্রী প্রথমবার উদ্যোগ নেয়ায় সংলাপ এগিয়ে নিতে হলে এখন পরবর্তী টেলিফোন খালেদা জিয়াকেই করতে হবে। দু দলের এমনি পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যেই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে দু নেত্রীর সংলাপ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের পক্ষ থেকে যখন বলা হচ্ছে দাওয়াত বহাল আছে, বিরোধীদলের পক্ষ থেকে যে কেউ একজন ফোন করে দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে পারেন। কিন্তু ফোন এবার কে করবেন সেই অকারণ অহংবোধই যেন এখন সংলাপের প্রধান বাধা।