ফের পাহাড় ধস, দুই জেলায় নিহত ৫

 

আরো দুর্যোগের আশঙ্কা : অব্যাহত বর্ষণ : এখনো কয়েকজন নিখোঁজ

স্টাফ রিপোর্টার: প্রবল বর্ষণের মধ্যে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে দুই জেলায় চার শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতের পর ও গতকাল রোববার সকালে খাগড়াছড়ির রামগড়, লক্ষ্মীছড়িতে এবং মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ধসের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এলাকার অসংখ্য বাড়ি-ঘর ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

গতকাল সকাল ৬টার দিকে রামগড়ের ভুদুংছড়া এলাকায় পাহাড় ধসে মাটির তৈরি একটি বাড়ি চাপা পড়লে সেখানে ঘুমিয়ে থাকা নুর নবী (১৪) ও নূর হোসেন সোহেল (৮) নামে দুই ভাই প্রাণ হারায়। তাদের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন (১৬) আহত হয়। তারা ওই এলাকার মোস্তফার ছেলে। এ সময় গোয়ালঘরে থাকা ৫টি গরু-ছাগল ও অন্তত ৫০ মুরগিও মারা যায়। এদিকে জেলার দুর্গম লক্ষীছড়ি উপজেলার লক্ষীছড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্র কার্বারি পাড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপায় ইথন চাকমা (৭) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। লক্ষীছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবীল চাকমা ইথন চাকমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লক্ষীছড়ি সদর ইউনিয়নের কয়েকটি বাড়ি ও মসজিদে পানি ঢুকেছে। অপরদিকে টানা বৃষ্টির কারণে রামগড় পাতাছড়া এলাকায় পাহাড় ধসে খাগড়াছড়ি-ফেনী-ঢাকা সড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকলেও আবার চালু হয়েছে।

মৌলভীবাজারে মা মেয়ের মৃত্যু: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মধ্য ডিমাই গ্রামে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে আফিয়া বেগম ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ফাহমিদা বেগমের মৃত্যু হয়েছে। দিবাগত শনিবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে টানা বর্ষণের সময় সকাল সাড়ে ৬টায় এলাকাবাসী খবর পেয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে। নিহতরা বড়লেখা সদর ইউনিয়নের মধ্যডিমাই গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী ও মেয়ে। ফাহমিদা স্থানীয় কেছরিগুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রওশনুজ্জামান সিদ্দীক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান প্রমুখ। বড়লেখা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সোয়েব আহমদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিন বলেন, শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত টানা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে টিলার মাটি ধসে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুর রহমান বলেন, ওই এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। আরও কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেই মাইকিং করা হয়েছিলো। তবে কেউই সরেননি। দুর্ঘটনায় মা-মেয়ের মৃত্যু হলেও এই পরিবারের একমাত্র ছেলে নানা বাড়ি থাকায় সে বেঁচে গেছে। তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।