ফের অচল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

 

স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্রলীগ নেতাদের চাকরির দাবিকে কেন্দ্র করে আবারো অচল হয়ে পড়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাস। চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পরিবহন ধর্মঘটে গতকাল শনিবার আবারো এ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

সূত্র মতে, ২০১২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে চাকরির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় ছাত্রলীগের তাণ্ডবলীলা। ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদকের শামসুজ্জামান তুহিনের নেতৃত্বে চলা ধ্বংসযজ্ঞে টানা ছয় মাস অচল থাকে ক্যাম্পাস। তৎকালীন ভিসি পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত হয়। ২০১৩ সালের ১৯ জানুয়ারি ইবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির মাধ্যমে সচল হয় বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ তিন মাসের জন্য ইবি ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়। দেড় বছর অতিবাহিত হলেও আজ নতুন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি ওই আহ্বায়ক কমিটি। ফলে আহ্বায়ক কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর কর্তৃত্ব না থাকায় নানা গ্রুপ ও উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ফলে বহিরাগত চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে ইবি শাখা ছাত্রলীগ জিম্মি হয়ে পড়েছে।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকার সমর্থক শিক্ষক সংগঠনের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলের এ ছাত্র সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে প্রশাসনের সাথে নেতাকর্মীদের দূরত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে। গতকাল শনিবার ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের চাকরি নিশ্চিতের দাবিতে ক্যাম্পাসে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় ছাত্রলীগ। ধর্মঘটের কারণে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় অচল হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস। পুলিশ পাহারায় কুষ্টিয়া থেকে শিক্ষকদের তিনটি বাস ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হলেও অধিকাংশ বিভাগেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অভাবে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে ধর্মঘটের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শামিম হোসেন খাঁন বলেন আমরা গত বুধবার ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করে কিছু দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। তবে ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি গতকাল শনিবার সকালে স্বীকার করলেও বিকেলে বলেন, কারা ধর্মঘট ডেকেছে আমি জানি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. মামুনুর রহমান বলেন, শুনেছি কারা নাকি বাস মালিক সমিতিকে হুমকি দিয়েছে। এ কারণে তারা গাড়ি দেয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন, কাদের ইন্ধনে গাড়ি চলাচল করেনি সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে ক্যাম্পাস সচল করার ব্যপারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ক্যাম্পাস অচলের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের লুকোচুরির বিষয় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভিসি অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, বুধবার ছাত্রলীগের আহ্বায়কের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতারা ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করে তালিকা অনুযায়ী চাকরি দাবি করেছে। তারাই ক্যাম্পাস অচল করে চাকরি বাণিজ্য করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এর পেছনে প্রশাসনের একটি অংশের ইন্ধন রয়েছে।