ফুলহরিতে থামছে না কান্না

 

শৈলকুপা প্রতিনিধি:বরযাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জন নিহত হওয়ার পর ঝিনাইদহের কাজীপাড়া ফুলহরি গ্রামে এখন কেবলই শোকের মাতম।আগের রাতেও যেখানে চলছিলো বধূ বরণের আয়োজন, সেখানে এখন শেষকৃত্যের স্তব্ধতা।নববধূ জ্যোৎস্না বিশ্বাসও শ্বশুরবাড়িতে পা রেখে কান্না থামাতে পারছেন না।কালীগঞ্জেরএকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জ্যোৎস্না আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদেরবিয়ের জন্য এতোগুলো মানুষের প্রাণ গেলো। এ দুঃখ সারা জীবন বইতে হবে।’

কালীগঞ্জউপজেলার সাকো মথনপুর গ্রামের সুবাস কুমারের মেয়ে জ্যোৎস্না বিশ্বাসেরসাথে বৃহস্পতিবার রাতে বিয়ে হয় শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের সাধন কুমারবিশ্বাসের ছেলে তাপস কুমার বিশ্বাসের।গাঁয়ের ছেলের বিয়ে, তাই বাস বোঝাই করে বরযাত্রী হয়ে ফুলহরি থেকে সাকো মথনপুরে গিয়েছিলেন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা।বিয়ের আসরেও সবকিছু ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু বউ নিয়ে নিজেদের গ্রামে ফেরার পথে ভোর পৌনে ৪টার দিকে বারোবাজার রেলক্রসিঙেই ঘটে দুর্ঘটনা।ঝিনাইদহজেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানান, সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামীসীমান্ত এক্সপ্রেস বারোবাজার রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় লাইনে উঠে পড়েবরযাত্রীবাহী বাসটি। ট্রেনের ধাক্কায় বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ওই অবস্থায় ট্রেনটি প্রায় আধা কিলোমিটার পথ বাসটিকে ঠেলে নিয়ে থেমে যায়।

ফুলহরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ জানান, দুর্ঘটনার খবরপৌঁছানোর সাথে সাথে বাড়িতে বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়। বিকেলে লাশগুলোগ্রামে পৌঁছানোর পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

তিনি বলেন, ‘এতোগুলা মানুষ একসঙ্গে মারা গেলো… এই গ্রামের মানুষ এই শোক ভুলবে কেমন করে…।বরতাপস ফুলহরি হাইস্কুলের একজন সহকারী শিক্ষক। অশ্রুসিক্ত চোখে তিনিসাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, স্টেশনমাস্টার আর গেটম্যানের গাফিলতিরকারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটলো।সন্ধ্যার আগেই লাশ হস্তান্তর শেষে তাদের শেষকৃত্য হয়ে গেছে বলে ফুলহরির চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ জানান।