ফাগুনের সপ্তাহখানেক বাকি : শীতের বিদায় বেলায় অসতর্ক হলেই সর্বনাশ

আবহাওয়া পরিবর্তনের ধকল সামলাতে না পেরে ব্যাপক হারে অসুস্থ হচ্ছে শিশু
স্টাফ রিপোর্টার: ‘বাব্বা! জাড় যেনো যাচ্ছিলোই না। যাওয়ার সময় আবার জ্বালিয়ে যাচ্ছে শিশুদের। বুঝতে না বুঝতেই বিদায় জাড়ের ডায়রিয়া হচ্ছে ওদের। আর বড়দের পোয়াতে হচ্ছে দুর্ভোগ।’ গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে উপচেপড়া ভিড় দেখে এক প্রবীণ নারী এ মন্তব্য করে বললেন, ‘শীতের সময় শিশুদের সুস্থ রাখাই যেনো বড় দায় হয়ে দাঁড়ায়।’
দিনপঞ্জির হিসেবে ফাগুনের আর মাত্র ৭ দিন বাকি হলেও বাস্তবে বাতাসে বসন্তের ছোয়া স্পষ্ট। বাউড়ির তেমন দেখা না মিললেও মাতাল বাতাসের দোলায় ঝরছে গাছে সদস্য হলুদ হওয়া পাতা। কোকিলের কুহু কুহু এখনও পর্যন্ত তেমন কানে না পৌঁছুলেও শীতের যে বিদায় ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে তা গাছের পাতা ঝরার ধরনে বুঝতে বাকি নেই। শীতের বিদায়ে তথা আবহাওয়ার পরিবর্তনে ষড়ঋতুর দেশে কতো রকমেরই যে রোগ বালাইয়ের বাড়তি ধকল সামলাতে হয় তার কোনো ইয়েত্তা নেই। এর মধ্যে শিশুদের নিউমোনিয়া আর ডায়রিয়া অন্যতম। শীতের বিদায়লগ্নে শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখে দিয়েছে। গতকালই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপাতালে ৩৭ শিশু ভর্তি করতে হয়েছে। পূর্বে ছিলো ৫৩। গতকাল ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৪ শিশু। আর ভূমিষ্ট হয়েই গতকাল হাসপাতালে ডায়রিয়ায় এক নবজাতককে ঝরে যেতে হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে চিকিৎসক বলেছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় বড়দের একটু বেশি বেশি সতর্ক থাকা দরকার। একটু সতর্ক হলেই রোটাভাইরাজ ও নিউমোনিয়া থেকে শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, গতকাল দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় ছিলো ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল মংলায় ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়া। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে অস্থায়ী আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সাথে কুমিল্লা অঞ্চলসহ সিলেট বিভাগের
দু’এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অনত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা ২ দিনের বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে।