ফলোআপ : দামুড়হুদার দলকালক্ষ্মীপুরে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ

গ্রামের অজ্ঞাতনামা দেড়হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার দলকালক্ষ্মীপুরে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা এক থেকে দেড়হাজার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে লক্ষ্মীপুর পুলিশ ক্যাম্পের টুআইসি নায়েক নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় ওই মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়ে গতকাল রাতে কয়েক গ্রামবাসীর সাথে মোবাইলফোনে জানতে চাইলে তারা বলেন এ ঘটনায় মামলা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে দামুড়হুদার দলকালক্ষ্মীপুরে ওয়াজ মাহফিলের জন্য টাকা তোলার সময় লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের জুয়েল নামের এক কনস্টেবলের কাছে ওয়াজ মাহফিলের টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে টাকা আদায়কারীদের সাথে ওই পুলিশ কনস্টেবলের বাগবিতণ্ডা হয়। এরই এক পর্যায়ে টাকা আদায়কারীরা ওই পুলিশ কনস্টেবলকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করে। এরই জের ধরে ওই পুলিশ কনস্টেবল ক্যাম্পে ফিরে বিষয়টি ক্যাম্প ইনচার্জকে জানালে ক্যাম্প ইনচার্জ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে টাকা আদায়কারীদের মধ্যে ৩ জনকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান এবং মারপিট করতে থাকেন। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য হামিদুল ইসলাম ক্যাম্পে যান এবং তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু ক্যাম্প ইনচার্জ ইউপি সদস্যের অনুরোধ না রেখে তাদেরকে আটকে রাখেন। ইউপি সদস্য ফিরে এসে মসজিদের মাইকে বিষয়টি গ্রামবাসীকে জানান। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে পুলিশের প্রতি সৃষ্টি হয় জনরোষ। গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ছুটে যায় ক্যাম্পে। শুরু হয় পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী তুমুল সংঘর্ঘ। এ সময় গ্রামবাসী হামলা চালিয়ে ক্যাম্প ভাঙচুর করে এবং ভগিরথপুর ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই ফারুকসহ ৩ পুলিশ কনস্টেবল আহত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ রাউন্ড ছোড়ে। পুলিশের ছোড়া সটগানের গুলিতে বেশ কয়েক গ্রামবাসী আহত হয়।

খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌছে গ্রামবাসীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এর পরপরই জেলার পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, মেহেরপুর গাংনীর র‌্যাব-৬’র একটি টিম, জেলার গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম, আলমডাঙ্গা থানার একটি টিমসহ চারুলিয়া, দুলালনগর, হোগলডাঙ্গা, ইব্রাহিমপুর, ভগিরথপুর ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ সুপার রশীদুল হাসানের নেতৃত্বে গ্রামবাসীর সাথে বৈঠক শেষে ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ আর্মড সুবেদার এসআই রবিউলকে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। এর আগে আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত এ মামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।