ফলোআপ: চুয়াডাঙ্গায় এনজিও কর্মকর্তার শ্বাসনালি কেটে দিয়েছে ছিনতাইকারীরা

 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বপনের অস্ত্রোপচার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়া এনজিও কর্মকর্তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ক্ষুর মেরে রক্তাক্ত জখম করে এনজিও কর্মকর্তা স্বপন কুমার সরকারের মোটরসাইকেল, মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পর রাতেই তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট-মাখালডাঙ্গা সড়কে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এনজিও কর্মকর্তা স্বপন কুমার সরকারকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ৩টায় তার শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অবস্থা আশংকাজনক বলে তার সহকর্মীরা জানান।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের থানা কাউন্সিলপাড়ার একটি ভাড়া বাড়িতে বিজ (বাংলাদেশ এক্সটেনশন এডুকেশন সার্ভিসেস) এনজিও’র শাখা অফিস। শাখা ব্যবস্থাপক স্বপন কুমার সরকার (৩৮) রোববার সন্ধ্যারাতে সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামে রওনা দেন মোটরসাইকেল যোগে। গাইদঘাট-মাখালডাঙ্গা সড়কের শালমারী কালভার্টের কাছে পৌঁছালে রাত ৮টার দিকে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন তিনি। ছিনতাইকারীরা তাকে ব্যারিকেড দিয়ে থামায়। এরপর এলোপাতাড়ি ও উপর্যুপরি ছুরি মেরে মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে সটকে পড়ে। রাতেই তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আউলিয়ার রহমান জানান, ‘রোগীর অবস্থা আশংকাজনক। তার শ্বাসনালির বেশির ভাগ কেটে গেছে। এছাড়া তার হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষুরের পোঁচ লেগেছে। চুয়াডাঙ্গায় তার চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গা বিজ অফিসের হিসাব রক্ষক শিউলী শারমিন জানান, ‘দীননাথপুর গ্রামে আমাদের এক কর্মীর সঙ্গে সমিতির এক সদস্যের একটু ঝামেলা হয়েছিল। এ জন্য ম্যানেজার স্যার রাতে দীননাথপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি।’ তবে তার কাছ থেকে কত টাকা ছিনতাই হয়েছে? বলতে পারেননি শিউলী শারমিন। বিজ-এর এরিয়া ম্যানেজার প্রদীপ চন্দ্র জানান, ‘ঘটনার সময় ৫/৬ জনের একদল ছিনতাইকারী স্যারকে ব্যারিকেড দিয়ে ক্ষুর দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও তার কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়।’ তিনি জানান, ‘রাত ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তিনি খুবই অসুস্থ এবং কথা বলতে পারছেন না। এ কারণে এর বেশি কিছু আমি বলতে পারছি না।’ এ ব্যাপারে তাদের মামলার প্রস্তুতি আছে বলে প্রদীপচন্দ্র জানান। ঘটনা কি শুধুই ছিনতাই, না কি আড়ালে অন্য কোনো ঘটনা থেকে থাকতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রদীপ চন্দ্র জানান, ‘এখন পর্যন্ত আমরা বিষয়টিকে ছিনতাই হিসেবেই দেখছি।’ চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হক বলেন, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ সুপার মহোদয়কে সঙ্গে নিয়ে ঘটস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে মোটরসাইলে উদ্ধার ও ছিনতাইকারীদের ধরার জন্য। মামলা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।’