ফলোআপ: গাংনীর সেই স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞ সার্জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার স্বাস্থ্য বিভাগ

 

আব্দু রাজ্জাকের অবস্থা আশঙ্কাজনক

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেকমো তানভীর হাসানের অপচিকিৎসার শিকার সাহারবাটি গ্রামের অসহায় আব্দুর রাজ্জাককে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মুমূর্ষু অবস্থায় কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার করেছে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এদিকে রাজ্জাকের বিশেষ অঙ্গের টিউমার অপারেশন করা সেই আলোচিত সেকমো তানভীর হাসান ও মালি রমজান আত্মগোপনে গেলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

গাংনী হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, বিশেষ অঙ্গের কাছের টিউমার অপারেশনের পর থেকেই আব্দুর রাজ্জাকের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই গতকাল সকালে তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাকের চিকিৎসার ব্যয়ভার সেকমো তানভীর হাসান বহন করবেন মর্মে এক প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে তাকে রেফার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম। সেইসাথে অনধিকার চর্চা করে অপারেশন করায় ওই দিন জরুরি বিভাগে দায়িত্বে কর্মরতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

এব্যাপারে সেকমো তানভীর জানান, তিনি কী করেছেন তা কর্তৃপক্ষ জানেন। টিএইচএ সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে সব উত্তর মিলবে।জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম বলেন, কোনো সেকমো অপারেশনের নাম পর্যন্ত মুখে আনতে পারবেন না। কীভাবে এটা হলো তা তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, দু মাস আগে তানভীর দু শিশুর সুন্নাতে খৎনা করার সময় ভুল অপারেশনে ওই দুজনের আজীবন পুরুষত্ব নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

এদিকে তানভীর হাসানের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে অপারেশন ও মাদক সেবনের অভিযোগে তদন্তে নেমেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সংবাদের প্রাকাশের প্রেক্ষিতে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. ইসমাইল ফারুক জানান, তদন্তপূর্বক বিভাগী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাকের অপারেশন ও স্থানীয় দেয়া বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সাহারবাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক গত ৮ জুলাই দুপুরে গোপনাঙ্গের পাশে টিউমারের চিকিৎসার জন্য গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। কর্তব্যরত সেকমো তানভীর হাসান ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজ্জাকের টিউমার অপারেশন করেন। সাথে ছিলেন মালি রমজান আলী। তারপর থেকেই প্রচণ্ড যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছিলেন রাজ্জাক। সার্জন না হয়ে কীভাবে তিনি অপারেশন করলেন তা নিয়ে হই চই শুরু হয়। স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনের প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে যান তানভীর ও রমজান।