ফলোআপ: কুষ্টিয়ায় শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা ও হামলাকারীদের গ্রেফতার না করার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছে হাসানবাগ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে স্কুলে এসে ক্লাস বর্জনের ডাক দেয় ছাত্রীরা। সকালে জেলা শিক্ষা অফিসের একটি দল স্কুল পরিদর্শন করেছেন। তারা গত সোমবারের হামলার ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। শিক্ষক, ছাত্রী ও স্থানীয়দের অভিযোগ,  আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপে প্রশাসন হামলাকারীদের না ধরে তাদের পক্ষ নিচ্ছেন। এদিকে হামলার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় থাকায় এজাহার দিলেও সেটি মামলা হিসেবে রুজু না করে জিডি হিসেবে নিয়েছে ইবি থানা পুলিশ। স্কুলের ক্লাস বর্জন করে ছাত্রীরা। ছাত্রীরা জানায়, দিনদুপুরে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা হলেও কাউকে আটক করা হয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অবিলম্বে দোষীদের আটক করা না হলে আমরা আরো কঠিন কর্মসূচিতে নামবো। স্থানীয় কিছু লোকজন শিক্ষকসহ আমাদের হুমকি দিচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে স্কুল পরিদর্শনে যান জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ইলিয়াস হোসেন। স্কুলে গিয়ে তিনি শিক্ষক, ছাত্রী ও আশপাশের লোকজনের সাথে কথা বলেন। এ সময় সবাই শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনার বর্ণনা দেন। শিক্ষা অফিসার হামলার সাথে জড়িতদের শাস্তি হবে বলে উপস্থিত সবাইকে আশ্বস্ত করেন।

জেলা শিক্ষা অফিসার সায়েদুর রহমান বলেন, সকালে আমার অফিসের একজন কর্মকর্তা স্কুলে পাঠিয়েছিলাম। ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করেছে। ওই কর্মকর্তা ছাত্রীদের সাথে কথা বলেছে। এছাড়া শিক্ষকদের সাথেও এ বিষয়ে তার কথা হয়েছে। একজন প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, মামলা না নিতে পুলিশকে চাপ দেয়া হচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনের সাথে দেখা করে ন্যায়বিচার চেয়েছি। শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা ভালোভাবে নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, একজন শিক্ষক যদি কোনো অপরাধ করে তার জন্য দেশে আইন আছে। সভ্য দেশে একজন শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়টি নিন্দনীয়। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি আদালতে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে। আদালত যে নির্দেশ দেবে সেটি করা হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মতামত না নিয়ে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করায় শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার ইন্ধনে গত সোমবার সদর উপজেলার হাসানবাগ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানসহ দুই শিক্ষককে পেটায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা।