ফলোআপ: ইবিতে চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলন : প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ : পরিবহন চলাচল বন্ধ

ইবি প্রতিনিধি: কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে চাকরির দাবিতে চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের আন্দোলনের কারনে অচল হয়ে পড়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে চাকরি প্রত্যাশীদের দেয়া তালা গতকাল মঙ্গলবারও ঝুলতে দেখা গেছে। প্রশাসন ভবন তালাবন্ধ থাকায় ভিসি, প্রোভিসিসহ কেউই অফিস করতে পারেননি। গত সোমবার দুপুর থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলনের কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাকরির দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে চাকরি প্রত্যাশীদের দেয়া তালা গতকাল মঙ্গলবারও ঝুলতে দেখা গেছে। সোমবার দুপুরে তারা প্রশাসন ভবন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দিয়ে ভিসি অফিসসহ প্রশাসন ভবনের সবকটি অফিস ও কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের উত্তর দিকের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢুকতে দেয়া হয়। পরে আবার তালা লাগিয়ে দেয় চাকরি প্রত্যাশীরা। তালা ভাঙার সময় চাকরি প্রত্যাশী আশিকুর রহমান জাপান, মোহাম্মদ আলী শিমুল, মিজানুর রহমান টিটুসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। জানা গেছে, প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার, উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আফজাল হোসেন, রেজিস্ট্রার ড. মসলেম উদ্দিনসহ কেউই অফিস করতে পারেননি। প্রশাসন ভবন তালাবন্ধ থাকার কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশাসন ভবনের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চাকরি প্রত্যাশীদের বাধার কারণে বোর্ড স্থগিত করা হয়। জানা গেছে, চাকরি প্রত্যাশীদের বাধার কারণে কোনো চাকরি প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতে ব্যর্থ হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত.ম লোকমান হাকিম প্রধান ফটক দিয়ে ঢোকার সময় চাকরি প্রত্যাশীদের তোপের মুখে পড়েন।

এদিকে গত সোমবার দুপুর থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্তিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাস কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে ক্যাম্পাসে না আসায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। ফলে কোনো বিভাগে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি এবং কয়েকটি বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আশিকুর রহমান জাপান বলেন, আমাদের চাকরির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট বার্তা না আসা পর্যন্ত পরিবহন অবরোধ চলতে থাকবে। এ সময়ে কাউকে অফিস করতে দেয়া হবে না বলে তিনি জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি অতিদ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, কর্মকর্তা-কমচারী পদে চাকরি দাবিতে গত সোমবার চাকরি প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীরা প্রশাসন ভবন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দিয়ে ভিসি অফিসসহ প্রশাসন ভবনের সব কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। একই দাবিতে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অবরোধের ডাক দেন।