প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে সুন্দরবন : হুমকিতে ইরাবতী ডলফিন

স্টাফ রিপোর্টার: সুন্দরবনের মধ্যে ডুবে যাওয়া ট্যাঙ্কার থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়েছে সুন্দরবন এলাকার নদী-খালসহ ৭০ কিলোমিটার এলাকায়। জোয়ারের সাথে এ তেল চলে এসেছে খুলনা নগরীসংলগ্ন রূপসা নদীতেও। এভাবে তেল ছড়িয়ে পড়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। গতকাল বুধবার পর্যন্ত তেল অপসারণের কোনো ব্যবস্থাই করতে পারেনি সরকারি সংস্থাগুলো। উদ্ধার হয়নি ট্যাঙ্কারটি। গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে ট্যাঙ্কার ডুবে যাওয়া অংশে তেল ছড়িয়ে পড়া অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে। ঘন কালো ঊর্ধ্বমুখি ঢেউয়ের মতো ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় তেল। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ ট্যাঙ্কারচালক মোখলেসুর রহমানেরও। এরই মধ্যে সুন্দরবন এলাকার কয়েকটি স্থানে নদীতে মরা মাছ ভাসতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দীর্ঘ মেয়াদে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণী অক্সিজেন ও খাদ্যসঙ্কটে মৃত্যুর মুখে পড়বে। এ সময়টি মাছ, ডলফিন প্রভৃতির প্রজননের সময় হওয়ার কারণে ক্ষতির পরিমাণ হবে আরও বেশি। অধিকাংশ জলজ প্রাণীর প্রজনন ক্ষমতাই নষ্ট হয়ে যাবে। বন বিভাগ ১০০ কোটি টাকার ক্ষতির কথা উল্লেখ করে মংলা থানায় মামলা করেছে।

সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে সেখানকার পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীটির অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পানিতে এবং দু পারে তেলের স্তর ভাসতে দেখা গেছে। তেলের কারণে এ নদীতে বিরল প্রজাতির ইরাবতী ডলফিনসহ বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিনের অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া সুন্দরবনের গাছপালা ও অন্যান্য প্রাণীর ওপরও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। পরিবেশ গবেষক এবং বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এ আশঙ্কার কথা। গতকাল বুধবার বিবিসি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।