প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করা যায় না : খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার: বিরোধী দলীয়নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) বিশ্বাস করা যায় না। তিনি একেকবার একেক কথা বলেন। একবার বলছেন ২৪ অক্টোবরের পর সংসদের অধিবেশন বসবে না, এখন আবার বলছেন সংসদ চলবে। খালেদা জিয়া বলেন, মন্ত্রিসভা বহাল রেখে নির্বাচন করলে সংঘাত হবে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের দাবি ছোট ও পরিষ্কার। নাম যাই হোক নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। আমরা শান্তি চাই, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সে সময় এখনও আছে। আলাপ আলোচনার মধ্যদিয়ে সে পরিবেশ সৃষ্টি করুন। গত বুধবার ঈদুল আজহার দিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সর্বস্তরের মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের ফাঁকে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান।

বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের জনসাধারণের সাথে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, সরকারকেই আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। জবরদস্তি করে একদলীয় নির্বাচন করলে জনগণ তা মেনে নেবে না। সরকার একতরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে। দেশের জনগণ তা হতে দেবে না।

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে খালেদা জিয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে ফাতেহা পাঠ করেন। সেখানে মোনাজাত শেষে তিনি গুলশানের বাসায় ফেরেন। এছাড়া ঈদের দিন তিনি বিদেশে অবস্থানরত দু পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো এবং তাদের স্ত্রী-সন্তানদের সাথে টেলিফোনে কথা বলে ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে জানা গেছে।

লন্ডনে চিকিত্সাধীন তারেক রহমান এবং ব্যাংককে চিকিত্সাধীন আরাফাত রহমান কোকোর সাথে ঈদে কথা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে বুধবার খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমার পরিবারের সদস্যরা দেশের বাইরে আছে। গতকাল (মঙ্গলবার) তাদের ঈদ হয়ে গেছে। কথা হয়নি। আজ (বুধবার) টেলিফোনে কথা হবে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে।

আনন্দের ঈদ মানুষ আনন্দের সাথে পালন করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ ঈদ, আনন্দের দিন। তবে জনগণের মুখে আনন্দের ছাপ নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। দেশের ও মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় মানুষ সেভাবে কোরবানি দিতে পারেনি।

খালেদা জিয়া বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। আওয়ামী লীগ ও হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। অতীতেও আওয়ামী লীগের অধীনে যেসব স্থানীয় নির্বাচন হয়েছে তা সুষ্ঠু হয়নি। একতরফা নির্বাচন হলে তা দেশে-বিদেশে কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিএনপি প্রধান অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরপিও ভঙ্গ করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। একদলীয় নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য সারাদেশে কেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটি গঠন শুরু হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন। পরে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য মঞ্চে ওঠেন তিনি। ১২টার দিকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারত, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ড, সৌদিআরব, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাই কমিশনার ও কূটনীতিকরা খালেদা জিয়ার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসেন। এরপর দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিরোধী দলীয় নেতা।

শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব). মাহবুবুর রহমান, হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইনাম আহামেদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।