প্রতারকদের খপ্পর থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন হাউলী ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু শাহ : ২৫ হাজার টাকা বিকাশ করলে পাবেন এক লাখ টাকা

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমানের পরামর্শে প্রতারকদের খপ্পর থেকে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছেন হাউলী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টু। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একজন এডিসি রেভিনিউ, একজন ডিএমপির দারোগা এবং অপরজন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সেজে মিন্টু শাহকে মোবাইলফোনে জরুরি ভিত্তিতে ২৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে ওই প্রতারকচক্র। চেয়ারম্যান টাকা দিতে গিয়েও খটকা লাগায় দামুড়হুদা ইউএনওর পরামর্শে অবশেষে তিনি এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছেন।

মিন্টু শাহ বলেন, ‘গতকাল বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে ০১৭১৫-০০৭২৬৬ নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে বলে আপনি কি হাউলী ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু শাহ বলছেন। আমি বলি হ্যা, আপনি কে বলছেন? তিনি পরিচয় দিয়ে বললেন আমি চুয়াডাঙ্গার এডিসি রেভিনিউ আব্দুর রাজ্জাক বলছি। তখন আমি তড়িঘড়ি সালাম দিয়ে বললাম স্যার বলেন। এরপর তিনি বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জয়েন্ট সেক্রেটারি কবির সাহেব আপনাকে খুঁজছেন। আমি বললাম কেন স্যার? তখন তিনি বললেন আপনার ইউনিয়নের উত্তর পাশের গ্রামের নাম কি? আমি বললাম জয়রামপুর স্যার। তখন তিনি বললেন ওই জয়রামপুর গ্রামের একটি ছেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাসায় ঝাড়ুদারের কাজ করে। তার মা এক্সিডেন্ট করেছিলো। আজ সকালে মারা গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনার নামে এক লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছেন। তবে ওই ছেলের মায়ের লাশ আঞ্জুমান মফিদুলে আছে। ওখানে ২৪ হাজার ৫৭৫ টাকা খরচ হয়েছে। আপনি ওই খরচের টাকাটা বিকাশ করে পাঠান। লাশের গাড়ির সাথে ডিএমপির দারোগা কামরুল ইসলাম যাচ্ছেন। উনার কাছে আপনার ওই এক লাখ টাকার চেকটি আছে। আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে টাকাটা তুলে নিতে পারবেন। আপনি আঞ্জুমান মফিদুলের ০১৭১৮-০০৭৭০৯ নম্বরে একটু কথা বলেন। আমি ওই নম্বরে ফোন করলে ওখান থেকে একই কথা বলা হয়। আমি ওই নম্বরে টাকা পাঠানোর জন্য আমার ফার্মের ম্যানেজার জাহাঙ্গীরের কাছে খরচসহ টাকা বিকাশ করতে পাঠাই। জাহাঙ্গীর টাকা নিয়ে বিকাশ করতে চলেও যায়। হঠাত ইউএনও স্যারের কথা মাথায় আসতেই মনে হলো বিষয়টি স্যারকে জানাই। আমি স্যারকে ফোনে বিষয়টি জানানোর সাথে সাথে উনি আমাকে বলেন ঘটনাটি সঠিক নয়। এটা প্রতারক চক্রের কারসাজি। আপনি টাকা দেবেন না। আমি কল কেটে দিয়ে তড়িঘড়ি টাকা দেয়া হয়েছে কি-না জানতে জাহাঙ্গীরকে ফোন করি। জাহাঙ্গীর বলে নাম্বার তোলা হয়ে গেছে আর এক মিনিট লাগবে। আমি সাথে সাথে জাহাঙ্গীরকে টাকা দিতে নিষেধ করি। আর এক মিনিট হলেই আমি ধরা খেয়ে গিয়েছিলাম।’ আধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে প্রতারকচক্র নানাভাবে প্রলোভন দিয়ে নিরীহ লোকজনকে প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এ ধরনের প্রলোভনে সাড়া দিচ্ছেন সমাজের এক শ্রেণির লোভী প্রকৃতির লোকজন।