পৌরসভার কাউন্সিলরদের সম্মানিভাতা বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: পৌরসভার কাউন্সিলরদের সম্মানিভাতা বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সামনে শহীদ আবুল কাশেম সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী এই দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন চুয়াডাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মালিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- খুলনা বিভাগীয় সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আয়ুব আলী, আলমডাঙ্গা পৌরসভার মতিয়ার রহমান, জীবননগর পৌরসভার শোয়েব আহমেদ এবং দর্শনা পৌরসভার রেজাউল হক ও আম্বিয়া খাতুন রাখেন। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- কাউন্সিলরদের সম্মানিভাতা ক শ্রেণির কাউন্সিলরদের ২৫ হাজার টাকা, খ শ্রেণির কাউন্সিলরদের ২০ হজার টাকা এবং গ শ্রেণির কাউন্সিররদের ১৫ হাজার টাকা করতে হবে। কাউন্সিলরদের সম্মান পদমর্যাদা নির্ধারণ করতে হবে। পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া দেশি-বিদেশি প্রকল্প, কর্মচারী নিয়োগ, টেন্ডার আহ্বান, হাট-বাজার এবং কর আদায় করা যাবে না। দেশি-বিদেশি যেকোনো প্রকল্পে ওয়ার্ডে দেয়ার অধিকার কাউন্সিলরদের দিতে হবে, ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলরদের কাজের তদারকি ও প্রত্যয়নপত্র দেয়ার বিধান থাকতে হবে। পৌরসভার টেন্ডার কমিটির সভাপতি কাউন্সিলরদের নিয়োগ দিতে হবে। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করতে হবে। পৌরসভার নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। পৌর কাউলিরদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে ও কাউন্সিলরদের দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

সভায় বক্তারা অবিলম্বে ৮ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তা না হলে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাবির পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে বক্তারা বলেন। এ সময় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ একরামুল হক মুক্তা ও প্যানেল মেয়র-২ মুন্সি রেজাউল করিম খোকন, আলমডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ সদর উদ্দিন ও প্যানেল মেয়র-২ মোহাম্মদ স্বপন, জীবননগর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ সাইদুর রহমান ও প্যানেল মেয়র-২ আফতাব উদ্দিন, দর্শনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রবিউল হক সুমন ও প্যানেল মেয়র-২ ফারুক হোসেনসহ চার পৌরসভার কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ১১ জানুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে পৌর কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানিভাতা ক শ্রেণির পৌরসভার ৫ হাজার থেকে বেড়ে ৮ হাজার টাকা, খ শ্রেণির পৌরসভার ৪ হাজার থেকে বেড়ে ৭ হাজার টাকা এবং গ শ্রেণির পৌরসভায় ৩ হাজার থেকে বেড়ে ৬ হাজার টাকা ঘোষণা করেছে সরকার। অথচ জেলা পরিষদের সদস্যদের সম্মানিভাতা করা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক পৌর কাউন্সিলরদের বেতন বৈষম্য ও অসস্মানজনক মাসিক সম্মানিভাতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করেছে মেহেরপুর শাখা। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক খায়রুল হাসান। মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক গাংনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নবীর উদ্দীনের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলা অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মেহেরপুর পৌর কাউন্সিলর আল মামুন, মনিরুল ইসলম মনি, গাংনী পৌর কাউন্সিলর বদরুল আলম বুদু, সাহিদুল ইসলাম, এনামুল হক, মিজানুর রহমান, আসাল উদ্দীন, আমিনুল ইসলাম, বাবলু আহম্মেদ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরসহ মেহেরপুর ও গাংনী পৌরসভার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। উপস্থিত বক্তারা বলেন, পৌর কাউন্সিলরদের সব ধরনের কাজ করতে হয়। অথচ তাদের সম্মানি নিয়ে স্থানীয় সরকার খেলা করছে। অবিলম্বে কাউন্সিলরদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করে সিটি করপোরেশনের সাথে সমতা আনা হোক। না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।